হামলার আগে গাজার অধিবাসীদের শহর ছাড়তে বলেছে ইসরায়েল

গাজা শহরের অধিবাসীদের শহর ছেড়ে দক্ষিণ দিকে একটি ‘মানবিক এলাকায়’ সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় এই নগর কেন্দ্রটি দখল করার জন্য একটি পরিকল্পিত আক্রমণের আগে এই নির্দেশ দেওয়া হলো। খবর এএফপির।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হামলার জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেয়নি, তবে এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল যে অপ্রত্যাশিত আক্রমণের ধারা বজায় রাখার জন্য অগ্রিম কোনো ঘোষণা দেওয়া হবে না।
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র আভিচে আদরাই ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, ‘এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে তাড়াতাড়ি (আল-মাওয়াসি) মানবিক অঞ্চলে চলে যান এবং সেখানে ইতোমধ্যে চলে যাওয়া হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে যোগ দিন।’
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আলাদাভাবে জানিয়েছে যে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত আল-মাওয়াসিতে ফিল্ড হাসপাতাল, পানির পাইপলাইন, ও লবণাক্ততা দূরীকরণ সুবিধা রয়েছে। পাশাপাশি সেখানে খাবার, তাঁবু, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সরবরাহ বজায় রয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে যে, সেখানে স্থল অভিযানের পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণের কাজ জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সহযোগিতায় চলতে থাকবে।
ইসরায়েল যুদ্ধের শুরুতে প্রথমে আল-মাওয়াসিকে একটি নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছিল, কিন্তু তারপর থেকে সেখানে বারবার হামলা চালিয়েছে। তারা বলেছে বেসামরিকদের লোকদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

গাজা শহরের বাসিন্দারা শনিবার এএফপিকে বলেছেন যে, তারা মনে করেন, তাদের থাকা বা পালানোতে খুব একটা পার্থক্য নেই।
রিমাল এলাকায় একটি তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া গাজা শহরের জাইতুন এলাকার বাসিন্দা ৪৮ বছর বয়সী আবদেল নাসের মুশতাহা বলেন, ‘কেউ কেউ বলছে আমাদের চলে যাওয়া উচিত, অন্যরা বলছে আমাদের থাকা উচিত।’
নাসের মুশতাহা আরও বলেন, ‘কিন্তু গাজার সবখানেই চলছে বোমা হামলা আর মৃত্যুর মিছিল। গত দেড় বছর ধরে, সবচেয়ে ভয়াবহ বোমা হামলা এই তথাকথিত মানবিক অঞ্চল আল-মাওয়াসিতেই হয়েছে। বেসামরিকদের লোকদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে তারা।’
তার ২০ বছর বয়সী মেয়ে সামিয়া মুশতাহা বলেছেন, ‘এটা এখন আমাদের কাছে আর কোনো পার্থক্য তৈরি করে না। আমরা যেখানেই যাই না কেন, মৃত্যু আমাদের পিছু নেয়, তা বোমা হামলায় হোক বা ক্ষুধায়।’