দোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় কাতার আমিরের তীব্র নিন্দা

কাতারের দোহায় ইসরায়েলের “বেপরোয়া অপরাধমূলক হামলার” কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি একে কাতারের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী বলেছেন। খবর আল জাজিরার।
প্রথমবারের মতো কাতারে এমন হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। হামাস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছে শীর্ষ নেতা খালিল আল-হাইয়ার ছেলে ও একজন সহকারী। কাতার জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী ‘লেখভিয়া’র কর্পোরাল বাদের সাদ মোহাম্মদ আল-হুমাইদি আল-দোসারি দায়িত্ব পালনকালে শহীদ হয়েছেন। আরও কয়েকজন নিরাপত্তা সদস্য আহত হয়েছেন।
হামাস দাবি করেছে, তাদের নেতারা এই হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছে। সংগঠনটি একে “নৃশংস অপরাধ, নগ্ন আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের চূড়ান্ত উদাহরণ” বলে আখ্যা দিয়েছে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানি ইসরায়েলি হামলাকে “রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ” বলেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, শুধু বিবৃতি নয়— কাতার ইসরায়েলকে জবাবদিহির মুখোমুখি করতে সব ধরনের আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেবে।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর নিশ্চিত করেছে যে দোহায় হামাস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এই হামলা ইসরায়েলের একক সামরিক অভিযান।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার আগে কাতারকে অবহিত করা হয়েছিল— তবে কাতার এ দাবি “ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরে বলেছেন, তিনি “হামলায় গভীরভাবে দুঃখিত” এবং কাতারকে আশ্বস্ত করেছেন যে এটি আর হবে না।

আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দোহায় যে এলাকায় হামলা হয়েছে তা মূলত আবাসিক এলাকা, যেখানে বিদেশি দূতাবাস ও স্কুলও রয়েছে। ঘটনাটি কাতারে শান্তি মধ্যস্থতাকারী ভূমিকায় থাকা অবস্থায় সংঘটিত হওয়ায় আঞ্চলিক কূটনীতিতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলের ২৩ মাসের যুদ্ধে ইতোমধ্যে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এ যুদ্ধের জন্য নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
কাতার ঘোষণা করেছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ইসরায়েলের এই ‘উন্মাদ আচরণ’ সহ্য করা হবে না।