গাজা যুদ্ধের অবসান পরিকল্পনা আরব নেতাদের সামনে তুলে ধরবেন ট্রাম্প

গাজা যুদ্ধের অবসান এবং বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে আরব ও মুসলিম নেতাদের সামনে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট জানান, বৈঠকে সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের নেতারা অংশ নেবেন। খবর আল জাজিরার।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দুই-রাষ্ট্র সমাধান বিষয়ক সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেন, তার দেশ গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, “শান্তির পথে এগিয়ে যেতে আমরা অংশ নিতে প্রস্তুত। গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে আমরা ইচ্ছুক।”
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি সেনাদের ভবিষ্যতে গাজা থেকে প্রত্যাহার, আঞ্চলিক দেশগুলোর সেনাদের দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং পুনর্গঠন ও অর্থায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে।
তবে এই পরিকল্পনায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয়েই হামাসকে নিরস্ত্র ও বিলুপ্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে।
পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কোনো ধরনের ভবিষ্যৎ সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, যদিও ইসরায়েল বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে প্রায় দুই বছর ধরে চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলায় প্রতিদিন বহু মানুষ নিহত হচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে আবাসিক ভবন এবং হাজার হাজার মানুষ দক্ষিণে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
আগের কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি হলেও ইসরায়েলি বিমান হামলায় তা ভেস্তে গেছে। মার্চে হামাসের সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার ঠিক আগে ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালিয়ে শত শত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে, যার ফলে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, হামাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠির খসড়া তৈরি করেছে। এতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রয়েছে, বিনিময়ে জীবিত থাকা প্রায় ২০ জনসহ অর্ধেক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। কাতারের হাতে থাকা চিঠিটি এই সপ্তাহের মধ্যে ট্রাম্পকে দেওয়া হতে পারে।
ট্রাম্প ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি উভয়েই মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখবেন।
তবে এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটির গভীরে অগ্রসর হচ্ছে এবং পশ্চিম তীরেও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে দখলকৃত অঞ্চলের অংশবিশেষ সংযুক্ত করার পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েলি সরকার।