কিশোরগঞ্জে পরিবেশবান্ধব গাড়ি উদ্ভাবন

কাঠের কাঠামোর গাড়ির ছাদে সংযুক্ত ৬০ ভোল্ট বা ৫০০ ওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল। দিনের বেলায় বিনা খরচে ইচ্ছেমতো গাড়ি চালানো যায়। এ ছাড়া ৪৮ ভোল্ট বা এক হাজার ৫০০ এমপিআর ক্ষমতার ব্যাটারি স্থাপন করে একবার সম্পূর্ণ চার্জে গাড়িটি চলতে পারবে টানা ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এতে খরচ পড়বে মাত্র ১২ থেকে ১৫ টাকার মতো।
সম্প্রতি এ ধরনের একটি জিপ সদৃশ গাড়ি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই এনামুল হক বুলবুল ও ইমরানুল হক।
চার আসনের এ গাড়িটি তৈরি করতে তাদের ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাড়িটির ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার গতিতে চলবে। ৪৮ ভোল্টের ডিসি মোটর গাড়িটির ইঞ্জিন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
পাকুন্দিয়ার রাস্তায় দুই ভাইয়ের গাড়িটি চালানোর ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ গাড়িটি দেখতে আসছে। আবার অনেকেই এ গাড়ির আরোহীও হচ্ছে।
পেশায় ব্যবসায়ী এনামুল হক বুলবুল বলেন, আমাদের দেশে অনেক মানুষের গাড়ি কেনার ইচ্ছে আছে। কিন্তু একটি গাড়ি কিনতে অনেক টাকা প্রয়োজন। যে কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের পক্ষে গাড়ি কেনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমি চিন্তা করি কীভাবে কম দামে গাড়ি তৈরি করা যায়। সেই চিন্তা থেকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের গাড়ির মালিক হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমার ছোট ভাইকে নিয়ে তিন মাসের মধ্যে কাঠ দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী সৌরবিদ্যুতে চলে এমন একটি গাড়ি তৈরি করি।

ছোট ভাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমরানুল হক জানান, নবায়নযোগ্য পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি স্বল্পমূল্যে মানুষ কিনতে পারবে।
নতুন ধরনের এই গাড়িটি সড়কে চলতে দেখে এবং এর গুণাগুণ শুনে উচ্ছসিত স্থানীয় বাসিন্দারাও। তারা মনে করছে যদি প্রয়োজনীয় সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে গড়িটি বাজারজাত করা যায়, তবে সাধারণ মানুষের প্রয়োজন মিটাতে সক্ষম হবে। গাড়িটি জনপ্রিয়তা পাবে।
জেলা সদর থেকে গাড়িটি দেখতে এসেছিলেন যুবক আল মামুন। পরে গাড়িতে চড়ে আল মামুন জানান, যেহেতু স্বল্পমূল্যে পরিবেশবান্ধব এই গাড়িটি কেনা যাবে, তাই এটি খুব ভালো একটি উদ্যোগ। গাড়িটি বাজারজাতকরণে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত।
এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন,আমাদের এলাকায় কাঠের জিপগাড়ি তৈরির সংবাদে আমি খুব আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু গাড়ির নির্মাতা দুই ভাই আর্থিক দৈন্য দশার কারণে গাড়িটি বাজারজাত করতে পারছে না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, গাড়িটি বাজারজাতকরণে যেন সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়।