অপহৃত কিশোর তৌহিদ হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/12/13/high-court.jpg)
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে অপহৃত কিশোর তৌহিদুল ইসলামের (১৯) ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিয়মিত তদারকি ও পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদারককারী সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) জনস্বার্থে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন (মানিক)।
রুলে ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও নিয়মিত তদারকির জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার জেলা প্রশাসককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১১২নং অনুচ্ছেদের আলোকে এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য, নিয়মিত তদারকি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদারককারী সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট আদালত, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, আইজিপি, ডিসি গুলশান, ডিসি (ডিবি) গুলশান, সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকাও জোগাড় করেছিলেন, কিন্তু ছেলের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পেলেন মা–বাবা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী নুরুল হুদা আনসারী। প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক কিশোর অপহৃত হওয়ার পর তার মা–বাবা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তবে সেখান থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে অপহরণকারীর চাহিদামতো মুক্তিপণের ৩০ লাখ টাকাও জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু সেই ছেলেকে আর ফিরে পাননি তারা। তিন দিন পর বসুন্ধরা এলাকা থেকেই উদ্ধার করা হয় তার গলাকাটা মরদেহ।
নিহত তৌহিদুল ইসলাম (১৯) পরিবারের সঙ্গে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪ নং সড়কের ডি ব্লকে থাকতেন। তার বাবা মোহাম্মদ নবী হোসেন জমি কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তৌহিদুল ছিলেন দ্বিতীয়। আগে মাদ্রাসায় পড়ে আসা তৌহিদুল বর্তমানে ভাটারার ডুমনি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়তেন।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে জুয়েল রানা (২৮) নামে বসুন্ধরা সিকিউরিটিজের একজন নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ২৬ নভেম্বর সকালে বসুন্ধরার ‘পি’ ব্লকের একটি ক্ষেত থেকে তৌহিদুলের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তৌহিদুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে জুয়েল রানা ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
তবে এ মামলায় পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তৌহিদুলের বাবা মোহাম্মদ নবী হোসেন। তিনি বলেন, ‘জুয়েল রানার একার পক্ষে তৌহিদুলকে খুন করা সম্ভব নয়। এ হত্যায় একটি চক্র জড়িত। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি এর তদন্তভার ভাটারা থানা থেকে ডিবিকে (গোয়েন্দা পুলিশ) দেওয়ার জন্য ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের কাছে আবেদন করেন।’