রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ নবজাতক
গত দুই দিন ধরে এক নবজাতক নিখোঁজ নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। গত বুধবার দুপুরে নিখোঁজের ঘটনা ঘটলেও আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিষয়টি জানাজানি হয়।
পাঁচ দিনের নবজাতক নিখোঁজের পর পুলিশ সন্ধান চালালেও শিশুটিকে উদ্ধার করা যায়নি। ঘটনার পর পরই শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতার কারণ দেখিয়ে ওই নবজাতকের মা ঐশী আক্তার নাম গোপন করে রাবেয়া নামে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই তথ্য বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের রেজিস্ট্রার থেকে জানা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নবজাতকের মা ও তাঁর স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। নবজাতকের মা ঐশী আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ। তিনি একই উপজেলা কুলকাঠি ইউনিয়নের হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ঐশী আক্তারের স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ বলেন, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি মেয়ে শিশু জন্ম দেয়। দুই দিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে আসি। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। এরপর সে অটোরিকশায় চড়ে কোথায় যেন চলে যায়। তারপর থেকে আমার সন্তানের হদিস মিলছে না। এ ঘটনায় আমি আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
নবজাতকের মামা মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতায় ভুগছেন। এজন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে-এ প্রশ্নের জবাবে তার বোন কিছুই বলতে পারছে না। হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশী। তাই রাবেয়া লেখা হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। এরপর সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শিশুটিকে তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে এসে খোঁজখবর নিয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছে থেকে পরিষ্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।