যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির ও চরমোনাই পীর
দেশের ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রশ্নে জনসাধারণের কাছে দোয়া চেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। আজ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে চরমোনাই মাদ্রাসায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই দোয়া চান তাঁরা।
এর আগে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই মাদ্রাসা ও দরবার পরিদর্শনে যান জামায়াতের আমির। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হয়ে ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠাতে চায় বলে জানান এই দুই শীর্ষ নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা মূলত ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দেখতে চাই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেব না। তাই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে শতকরা ৯১ জন নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বাকি যারা আছে ৯ ভাগ তারাও এই দেশের মানুষ। তারা ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুসারীর পাশাপাশি কিছু নাস্তিকও থাকতে পারে। সব মিলিয়ে আমাদের বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫৪ বছর হয়েছে কিন্তু স্বাধীন দেশের মর্যাদা পাইনি। এটার মূল কারণ হলো দুর্নীতি ও দুঃশাসন। যেখানে আল্লাহর বিধান থাকবে না সেখানে দুর্নীতি ও দুঃশাসন আসবেই। নামাজের বিধান মানলে সমাজেও আল্লাহর বিধান মানতে হবে। কিছু মানা ও কিছু না মানার কারণে দেশ এমন হয়েছে। আমাদের মনের আকাঙ্ক্ষা পুরোটা মানতে চাই, এজন্য আমরা দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। দেশের জনগণের মনে আকাঙ্ক্ষা একবার এই দেশে ইসলাম কায়েম হোক। কারণ মানব রচিত মতবাদ দেশবাসী দেখেছেন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর বলেন, আমাদের মিলনমেলা আল্লাহর জন্য। এই মিলন রাজনীতির মাঠেও থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। জনগণের প্রত্যাশা নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইসলামী দলগুলোর যেন একটা বাক্স থাকে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার প্রয়োজন তা শেষে নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগের সব ষড়যন্ত্র অতীতে ব্যর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে।
ভারত প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা ভারতের কাছ থেকে আশা করব কাঁটাতারের বেড়া না থাকুক। এটা আমাদের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই দ্রুত দ্রব্যমূল্য কমে আসুক। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানান তিনি।
চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, নির্বাচনের সময় ইসলামের পক্ষে একটা বাক্স কেন্দ্রে পাঠানোর প্রচেষ্টা আগেও ছিল এখনও চলছে। বিভিন্ন কৌশলে গত ৫৩ বছর ইসলামী দলগুলোকে দূরে রেখেছে। ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতার মাধ্যমে ইসলামী পক্ষের একটি ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষেত্রের যদি আমরা সময় উপযোগী বিচার না করতে পারি তাহলে আমাদের জন্য তা অকল্যাণকর। এ সময় সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এই দুই দল চায় বলে জানান দুই শীর্ষ নেতা।
এ সময় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান চরমোনাইর প্রথম পীর মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাকের কবর জিয়ারত করেন। দুপুরের খাবার খেয়ে তিনি বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে দলের কর্মিসভায় যোগ দেন।