১০ বছর ধরে তিনবেলা কাঁচা শাক-সবজি খাচ্ছেন কৃষক আনোয়ার
বিস্ময়করভাবে টানা ১০ বছর ধরে তিনবেলা কাঁচা শাক-সবজি খেয়ে চলেছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের পূর্ব হাত্রাপাড়ার কৃষক আনোয়ার সিরাজী। কাঁচা ফুলকপি, মূলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া থেকে শুরু করে লাউ-করলার পাতাসহ সব শাক-সবজি তাঁর খাবারের অন্তর্ভুক্ত।
অবাক করা বিষয় হচ্ছে প্রতিদিন তিনবেলা কাঁচা শাক-সবজি খেয়েও আনোয়ার সিরাজী পুরো সুস্থ আছেন। এতে তাঁর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন এর ফলে যেকোনো সময় জটিল শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন তিনি।
১০ বছর আগে কঠিন অসুখে পড়েন আনোয়ার সিরাজী। এজন্য তিনি ঢাকার দুটি বড় হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। চিকিৎসায় কোনো উপকার না পেয়ে তিনি একপর্যায়ে কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া শুরু করেন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেন। তখন থেকে তিনি তিনবেলা নিয়মিত কাঁচা শাক-সবজি খেয়ে চলেছেন। এতে তিনি সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় চলাফেরা করছেন।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে পূর্ব হাত্রাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরে খাবার সময় হওয়ায় আনোয়ার সিরাজী বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের ফসলি জমি থেকে কাঁচা শাক-সবজি তুলে সেখানে বসেই খাচ্ছেন।
আনোয়ার সিরাজী জানান, চিকিৎসা করে উপকার না পেয়ে তিনি কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া শুরু করেন।
আনোয়ার সিরাজী বলেন, আমি জানি কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া ভালো না। তবে আমি উপকার পাচ্ছি বলে খাচ্ছি। আমার যেকোনো সবজি কাঁচা খেতে কোনো সমস্যা হয় না। তবে অন্যরা খেলে সমস্যা হতে পারে।
আনোয়ার সিরাজীর ছোট ভাই আরিফ সিরাজি বলেন, কঠিন অসুখে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমার বড় ভাই কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া শুরু করেন। এতে তাঁর কোনো সমস্যা হয় না।
আনোয়ার সিরাজির কাঁচা শাক-সবজি খাওয়ার ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে সাড়া পড়েছে। এ নিয়ে সবার মধ্যে এক ধরনের কৌতূহল কাজ করে। স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুর রহমান, আব্দুল জলিল ও আবুল বাশার জানান, আনোয়ার সিরাজীর কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া দেখে শুরুর দিকে অনেকেই শারীরিক ক্ষতির আশংকায় তাঁকে বাধা দিয়েছেন। কিন্তু কাঁচা সবজি খাওয়ার কারণে তাঁর কোনো ক্ষতি না হওয়ায় পরে বাধা দেওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কাঁচা শাক-সবজি খাওয়া ঠিক নয়। কেউ কাঁচা শাক-সবজি খেলে লিভার, কিডনি ও পাকস্থলির নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কোনো শাক-সবজিই কাঁচা খাওয়া কারো জন্য নিরাপদ নয়।