নারী মক্কেলের ওপর হামলা : আইনজীবীর বিরুদ্ধে জেলা বার ও থানায় অভিযোগ

ময়মনসিংহে আদালতপাড়ায় নারী মক্কেলের ওপর হামলার ঘটনায় দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানা ও জেলা আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নারী। হামলার ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় বইছে।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন সহযোগী পাবলিক প্রসিকিউটর মাসুদ রানা (৪৫), সাজু মিয়াসহ (৫৫) অজ্ঞাত পরিচয় দু-তিনজন। গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় ঘটনাটি ঘটে।
আহতরা হলেন রুকেয়া (৫০), শিউলি (৪০), মিলিকা (৫০)। তবে অভিযুক্তরা দায় অস্বীকার করেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।
থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাত মাস আগে ত্রিশাল উপজেলার বাইন্নবাড়ীর রোকেয়া (৫০) এক গরু চোরকে মেরে ফেলার মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি তাঁর প্রতিবন্ধী ভাই আজগর আলীকে (৫৫) মুক্ত করতে অ্যাডভোকেট মাসুদ রানাকে ধরেন। ভাইকে জামিন করাতে তিনি দুই দফায় দুই লাখ টাকা নেন। কিন্তু জামিন করে দিচ্ছি, দিব বলে প্রায় সাত মাস পার হলেও ভাইয়ের জামিন না করে তাঁকে হয়রানি করছেন।
অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, এ ঘটনায় গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) আদালতপাড়ায় অ্যাডভোকেট মাসুদ রানার কাছে জামিনের জন্য দেওয়া টাকা এবং মামলার নথি ফেরত চান। এতে তিনি রাগান্বিত হয়ে রোকেয়াসহ তাঁর ছোট বোন শিউলি (৪০), বড় ভাইয়ের বউ মিলিকাকে (৫০) এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারেন এবং পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। এ সময় তাঁর গলায় থাকা এক লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণের চেইন খোয়া যায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এ সময় অ্যাডভোকেট হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোর টাকা দিব না, জামিনও করিয়ে দিব না—তুই যা পারস কর গিয়ে। তোদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়ব। যদি আবার টাকা দাবির চেষ্টা করছ তাহলে প্রাণে মেরে ফেলব।’
এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা (৪৫) বলেন, আমি কাউকে মারধর করিনি। মহুরিরা করে থাকতে পারে। তাদের ফাইল ফেরত দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় অভিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাজু মিয়া বলেন, গণ্ডগোল, চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ শুনে আমি নিচতলা থেকে ওপরের তলায় যাই। আমি গণ্ডগোল মিটাতে যাই। কাউকে মারধর করেছি—এ অভিযোগ মিথ্যা।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি বলেন, ঘটনা তদন্ত করছেন উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন চন্দ্র দাস। ঘটনার সত্যতা পেলে পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।