ঝড়-বৃষ্টিতে ধসে পড়া প্রাচীর কেড়ে নিল ছোট্ট বিথির প্রাণ

নাটোরের বড়াইগ্রামে ঝড়-বৃষ্টিতে বাড়ির ধসে পড়া প্রাচীরের চাপায় বিথি খাতুন (১২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২১ মে) সন্ধা আনুমানিক ৬টা ৪৫ মিনিটে উপজেলার মাঝগ্রাম ইউনিয়নের আগ্রান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিথি ওই এলাকার কৃষক আবু বক্করের বড় মেয়ে। বিথি স্থানীয় একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট। তখন চারদিকে হঠাৎ কালো মেঘে ঢেকে আসে আকাশ, শুরু হয় প্রবল ঝড় ও ভারী বৃষ্টি। সেই সময় বিথি বাড়ির প্রাচীরের পাশে থাকা একটি কলের কাছে হাত-পা ধুচ্ছিল। হঠাৎ করেই প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিতে বাড়ির পুরনো ও দুর্বল প্রাচীরটি ধসে পড়ে বিথির শরীরে। বিকট শব্দে ভেঙে পড়া প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে ছোট্ট মেয়েটি। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাড়িজুড়ে। বিথির পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাকে উদ্ধার করে এবং দ্রুত বনপাড়া বাইপাসে অবস্থিত বেসরকারি আমেনা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই বিথি মারা গেছে। বিথির নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার ও এলাকাবাসী।
বিথির চাচাতো ভাই হালিম হোসেন বলেন, ‘এই করুণ মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের নয়, একটি গ্রামেরও অপূরণীয় ক্ষতি। স্কুলে ভীষণ মনোযোগী ছিল বিথি। শিক্ষকরা বলতেন, সে বড় হয়ে শিক্ষক হতে চায়, গ্রামের শিশুদের পড়াতে চায়। এমন স্বপ্ন নিয়ে পথচলা ছোট্ট মেয়েটি জীবন নামের পথেই থেমে গেল এক অযত্নে নির্মিত প্রাচীরের নিচে। ছোট্ট বোনটিকে হারিয়ে তিনি নিজেও শোকাহত। বিথির মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামের মানুষজন বিথির বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন, সবাই বাকরুদ্ধ।’
এ বিষয়ে বিথির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান।’