কুমারখালীতে ১৬ জেলের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিকল্প জীবিকার্জনের জন্য নিবন্ধিত ১৬ জন জেলেকে ১৬টি বকনা বাছুর প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি বাছুরের মূল্য ২৭ হাজার ৮০০ টাকা। আজ শনিবার (২৪ মে) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে এই বাছুর প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম। উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৯৮৩ জন। এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ১৬ জন জেলেকে বাছুর দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৫ জন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫০ জন জেলেকে বাছুর প্রদান করা হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে আরও ১৬ জনকে বাছুর দেওয়া হবে।
বকনা বাছুর পেয়ে খুশি জেলেরা। তারা জানিয়েছেন, এই বাছুর লালনপালন করে তারা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের জেলে মাজু কাজীর ছেলে রমজান কাজী বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নদীতে নামা নিষেধ থাকে। সেসময় সরকার ২৫ কেজি চাল দেন, কিন্তু তা দিয়ে সংসার চলে না। এখন একটি বাছুর পেয়েছি। লালনপালন করে এটাকে বড় করব, একসময় এর থেকে দু-তিনটা হবে। গরু আর দুধ বেচে আমি উন্নতি করতে চাই।
কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া জেলেপাড়ার জেলে বাবুল হোসেন বলেন, গতবছর একটি বাছুর পেয়েছিলাম। এখন সেটির পেটে তিন মাসের বাছুর এসেছে। আশা করছি, এক গরু থেকে একসময় খামার হয়ে যাবে। আমাদের পাড়ার যারা প্রথম চালানে পেয়েছিল, তাদের দু-তিনটি করে গরু হয়ে গেছে।
প্রায় ৫৫ বছর ধরে পদ্মা নদীতে মাছ ধরছেন কয়ার সুলতানপুর গ্রামের জেলে জামাল প্রামাণিক। তিনি বলেন, বাছুর পেয়ে খুব খুশি। বড় হলে আরও বাছুর হবে, চার-পাঁচ কেজি করে দুধ হবে। দুধ বেচে খরচ চালাব।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জীবিকার্জনের জন্য জেলেদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বকনা বাছুর প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে জেলেরা যেন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকেন, সেজন্য বাছুর প্রদানসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে। জেলেদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।