শেখ হাসিনার হলফনামায় মিথ্যা তথ্য, আইনি মতামত পেয়ে ব্যবস্থা নেবে ইসি

শেখ হাসিনার নির্বাচনি হলফনামায় তথ্য গোপনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। সেই চিঠি পেয়ে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে আইন শাখায় মতামত চেয়েছে। মতামত পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেবে সংস্থাটি।
আজ শনিবার (২৪ মে) নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, শেখ হাসিনার নির্বাচনি হলফনামায় তথ্য গোপনের বিষয়ে দুদকের চিঠি পেয়েছে ইসি। এ বিষয়ে ইসির আইন শাখার মতামত চাওয়া হয়েছে। তাদের মতামত পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুই-তিনদিনের মধ্যেই এই মতামত দিবে নির্বাচন কমিশনের আইন শাখা।
ইসিকে দেওয়া চিঠিতে দুদক বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক দুর্নীতি দমন কমিশনে সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়। উক্ত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে ১৯-১১-২০০৮ তারিখে নির্বাচন কমিশনে তার দাখিলকৃত হলফনামা পর্যালোচনা করা হয়।
প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে হলফনামার মাধ্যমে দাখিলকৃত পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণীতে তার নিজ নামে অর্জিত কৃষি জমির পরিমাণ ৬.৫০ একর উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ক্রয়কৃত জমির অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু, সমসাময়িক সময়ে তার কর্তৃক দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ-এর নিজ নামে অর্জিত ২৮ দশমিক ৪১১ একর জমির তথ্য পাওয়া যায়। তন্মধ্যে তার ক্রয়কৃত জমির মূল্য ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা। সে অনুযায়ী তদনুযায়ী তিনি হলফনামায় ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথা গোপন করেছেন এবং ক্রয়কৃত জমির মূল্য ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকা কম দেখানোর মাধ্যমে হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদান করেছেন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ ছাড়া তিনি মাগুরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর এর সংসদ সদস্য পদের শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বেনামে ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো মূল্যে (গাড়ি আমদানির এলসির বিপরীতে ব্যাংক হতে পরিশোধিত মোট ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা) একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি আমদানি করে নিজ আবাসিক ঠিকানা 'সুধা সদন', বাড়ি নম্বর-৫৪, রোড নম্বর-৫, ধানমণ্ডি, আবাসিক এলাকা, ঢাকা-এর ঠিকানা ব্যবহার করে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৬৩৬৪) করেন এবং নিজে তা ব্যবহার করেছেন।
প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর এর আয়কর নথিতে কিংবা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত তার হলফনামায় আলোচ্য গাড়িটির বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি এবং তিনি কখনো তা ব্যবহারও করেননি মর্মে জানা যায়। এমতাবস্থায়, কমিশন কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বর্ণিত তথ্যাদির আলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ-এর বিরুদ্ধে 'গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২' এর আওতায় হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদানের বিষয়ে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।