নিয়মিত অফিস করেন না পিআইও, বরাদ্দ নিয়েও প্রশ্ন

নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করা এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিনের এই অভিযোগের মধ্যে চলতি সপ্তাহে তিনি একদিনও অফিস করেননি। আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরেও অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে ছুটিতে থাকার কথা জানান। ধমকের সুরে বলেন, তার ছুটি সম্পর্কে সাংবাদিককে জানানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
জানা গেছে, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি বান্দরবানের লামা উপজেলা থেকে বদলি হয়ে বদলগাছি আসেন পিআইও মো. মনিরুল ইসলাম। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করা, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে অশালীন ও উগ্র আচরণের অভিযোগ ওঠে। তিনি অফিসে না থাকলে অধিকাংশ সময় তার অফিসের স্টাফরা বলেন, তিনি ‘ফিল্ডে’ আছেন।
পিআইও মনিরুল ইসলাম নিয়মিত অফিস না করায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পের কাজগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। চলতি বছর বদলগাছি উপজেলায় প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পের কাজের জন্য বরাদ্দ এসেছে। প্রতিটি ইউনিয়নে কাজের ক্ষেত্রে সাইনবোর্ড দিয়ে কাজের বিবরণী দেওয়ার নিয়ম থাকলেও বদলগাছি উপজেলার আটটি ইউনিয়নের কোথাও কাজের কোনো বিবরণী বা সাইনবোর্ড দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে পিআইও মনিরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলা হয়। তিনি বলেন, ‘অফিসিয়াল গোপন তথ্য সাংবাদিকদের দেওয়া নিষেধ। কত টাকা বরাদ্দ এসেছে? আর কী কাজ করতে হবে বা করা হচ্ছে, সেটা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য কারও জানার অধিকার নেই।’ বলে তিনি মোবাইল ফোন কেটে দেন।
আজ দুপুরে বদলগাছি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহকারী মোহাম্মদ রাব্বিউল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে পিআইও মো. মনিরুল ইসলাম কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি কোথায় আছেন, এ বিষয়ে জানা নেই। এবারের গ্রামীণ উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পের কাজের বরাদ্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাব্বিউল ইসলাম বলেন, প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে এবং কোথায় কোথায় কাজ হচ্ছে, সেটা পিআইও সাহেব বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আশেকুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার বদলগাছি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মনিরুল ইসলাম দুই দিনের ছুটি নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কেন তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত, এ বিষয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বদলগাছি উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পের জন্য কত টাকা বরাদ্দ এসেছে জানতে চাওয়া হলে আশেকুর রহমান জানান, বদলগাছি উপজেলায় টিআর, কাবিখা এবং এইচবিবি সড়ক নির্মাণ বাবদ প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে।
উন্নয়ন কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না এবং পিআইওর অনুপস্থিতিতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আশেকুর রহমান বলেন, ‘বর্ষার মৌসুমের কারণে কাজে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। তবে উন্নয়ন কাজে কোনো গাফিলতি থাকলে সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’