ক্যামেরার পেছনের কৌশল

সিনেমার গল্প যখন তৈরি করা হয় তখন পুরো সময়টাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ভাগে থাকে গান। গড়ে প্রতিটি ছবিতে গান থাকে পাঁচটি করে। প্রতিটি গানের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয় গড়ে পাঁচ মিনিট। সে হিসেবে একটি ছবিতে ২৫ মিনিট গান থাকে। প্রতিটি ছবিতে মারামারির দৃশ্য থাকে কমপক্ষে চারটি, এর মধ্যে প্রথম তিনটি দৃশ্যের সময় নির্ধারণ করা হয় তিন মিনিট করে মোট ৯ মিনিট আর চার নম্বর মারামারির দৃশ্য বা ছবির শেষে যে অ্যাকশন থাকে তাকে বলে লাস্ট ফাইট বা শেষ মারামারি। আর এই ফাইটের শেষে সবার মিলন দেখানো হয়ে থাকে, সেজন্য এর সময়ও একটু বেশি- পাঁচ থেকে সাত মিনিট। মারামারির দৃশ্য আর গান মিলে একটি ছবিতে সময় বরাদ্দ থাকে মোট ৪০ মিনিট। একটি ছবির মোট দৈর্ঘ্য থাকে দুই ঘণ্টা ১৫ মিনিট। সেখান থেকে ৪০ মিনিট বাদ মিলে ছবির মূল গল্প থাকে ৯০ থেকে ৯৫ মিনিট। তবে অ্যাকশন ছবিতে মারামারির দৃশ্য থাকে সাত থেকে আটটি। বাংলাদেশের দর্শক ‘ফাইট’ দেখতে ভালোবাসে তাই ‘ফাইট’কে সমৃদ্ধ করতে চেষ্টা চলছে বলে জানালেন, বাংলাদেশের শীর্ষ ফাইট ডিরেক্টর মোহম্মদ আরমান।
মারামরি হবে আর রক্ত থাকবে না, তাই কি হয়? এই রক্ত কী দিয়ে বানানো হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে ফাইট ডিরেক্টর আরমান বলেন, ‘আমরা এই রক্তের জন্য রুহ আফজা শরবত ব্যবহার করি। কারণ রক্ত সাধারণত মুখের আশপাশে লাগাতে হয়। যেহেতু রুহ আফজা বিশুদ্ধ এবং মিস্টি তাই এটি শরীরের ক্ষতি করে না। এটি মিষ্টি হওয়ায় মুখের ভেতরে চলে গেলেও কারও বিরক্ত লাগে না।’
এটাতো সাধারণ রক্ত, অনেক সময় জমাট বাধা রক্তও ব্যবহার করতে হয় ছবিতে। এ প্রসঙ্গে আরমান বলেন, ‘মারামারি যখন চলে তখন আমরা রুহ আফজা ব্যবহার করলেও মারামারির কিছুক্ষণ পর এই রক্তটা শুকিয়ে যায়। এই শুকনো রক্ত তৈরি করতে আমরা রুহ আফজার সাথে ময়দা ও খাওয়া যায় এমন লাল তরল রং ব্যবহার করে থাকি। আবার কখনো দেখা যায় যে, রক্ত গড়িয়ে পড়ছে এমন রক্তের জন্য আমরা রুহ আফজার সাথে খাওয়া যায় এমন তরল রং মিশিয়ে দেই। তবে আমাদের রক্তের মূল উৎস রুহ আফজাই।’
ক্যামেরায় কাহিনীকে বস্তুনিষ্ঠ করে তুলতে শুধু রুহ আফজা প্রয়োগ নয় আরো নানা রকম কায়দা-কৌশল করতে হয় নির্মাতাদের। সে গল্প আরেকদিন হবে।