লাইফ সাপোর্টে ফরিদা পারভীন

শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে দেশবরেণ্য লালন-সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে। গতকাল বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বড় ছেলে ইমাম নিমেরী।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, ফরিদা পারভীন এখন ভেন্টিলেটর মেশিনে আছেন, যেটিকে সাধারণত লাইফ সাপোর্ট বলা হয়। তিনি নিজে থেকে শ্বাস নিতে পারছেন না। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেছে, ব্লাড প্রেসারও পাওয়া যাচ্ছে না। ঔষধ দেয়ার পরও তেমন সাড়া মিলছে না। যদি উনার ব্লাড প্রেসার বাড়ে তাহলে হয়ত আশা করা যাবে। আর না বাড়লে হার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যেটাকে হার্ট অ্যাটাক বলে। তখন আমাদের কিছু করার থাকবে না।
ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। ভোগান্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাকে এখন সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করাতে হয়। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর এক বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ১৩ দিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফেরেন। এরপর ৫ জুলাই তাকে হাসাপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। টানা দুই সপ্তাহ তখন হাসপাতালে ছিলেন।
নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানে শুরুর পর লালনসংগীতে গিয়ে শ্রোতাদের কাছে বেশ পরিচিতি পান ফরিদা পারভীন। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুল সংগীত গাইতে শুরু করেন ফরিদা পারভীন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালন সংগীতের তালিম নেন ফরিদা পারভীন।
ফরিদা পারভীন ১৯৮৭ সালে সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ১৯৯৩ সালে সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।