আজ শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনকে শেষ শ্রদ্ধা, দাফন কুষ্টিয়ায়

মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন দেশের ‘লালন সম্রাজ্ঞী’ খ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। গতকাল শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরে তাকে দাফন করা হবে।
বিষয়টি হাসপাতালে গণমাধ্যমের সামনে নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর স্বামী প্রখ্যাত বংশীবাদক ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম।
ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম সাংবাদিকদের জানান, সকালে ‘অচিন পাখি’ নামে গানের স্কুলে শিল্পীকে নেয়া হবে। এরপর সকাল ৯টায় তেজকুনি পাড়া মসজিদে শিল্পীর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলার আঞ্চলিক সুর ও লালনের গানকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলেন ফরিদা পারভীন। ভক্ত-শ্রোতাদের কাছে তিনি ছিলেন শুধু শিল্পী নন, ছিলেন লালনচর্চার অন্যতম প্রধান মুখ। তার কণ্ঠে ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’, ‘আমি কোথায় পাবো তারে’, ‘তুমি জানো না রে প্রাণহীন দেহে’, ‘নিন্দা আর করিস না বকুল ফুল’—এসব গান হয়ে উঠেছিল কালজয়ী।
১৯৫৪ সালে নাটোরে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। শৈশবেই সংগীত শিক্ষার হাতেখড়ি। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সংগীতচর্চায় যুক্ত হন। ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুল সঙ্গীতের মাধ্যমে তার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে লালনের গান দিয়েই তিনি সবার হৃদয়ে জায়গা করে নেন।
কণ্ঠশিল্পী হিসেবে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ফরিদা পারভীন পেয়েছেন একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। তিনি রেখে গেছেন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী।