নবজাতকের রেটিনার সমস্যার চিকিৎসা কী?

শিশু অপরিপক্বভাবে জন্ম নিলে চোখের রেটিনায় কিছু সমস্যা হতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬০০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. এস বি রাসেল। বর্তমানে তিনি ভিশন আই হসপিটালের রেটিনা বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : রেটিনার সমস্যাকে কীভাবে ঠিক করা যায়?
উত্তর : এটি একটি দলগত কাজ। যে গাইনোকোলজিস্টের কাছে বাচ্চাটা হলো, সেই বাচ্চাকে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো।
প্রশ্ন : কখন শিশুর রেটিনার চিকিৎসা শুরু করবে বা কীভাবে বিষয়টি বোঝা যাবে?
উত্তর : যেসব বাচ্চা অপরিপক্বভাবে জন্ম নিচ্ছে, এর মধ্যে ১০ ভাগ বাচ্চার রেটিনা পুরোপুরি বৃদ্ধি পায় না। এদের আবারও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেলে সে যখন বিষয়টি বুঝল, তখন তারই কর্তব্য হলো একজন রেটিনা বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া। এই বাচ্চাকে তো আই হাসপাতালে বা চেম্বারে নেওয়া সম্ভব নয়। চিকিৎসক নিজে এসেই দেখে যাবেন। আমাদের প্রটোকল ইউনিট আছে। বাচ্চাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে গিয়েই আমরা দেখে আসি। এটা দেখে আমরা বলি, তার কি আরো বাড়তি চিকিৎসা দরকার, নাকি ফলোআপে থাকতে হবে, সেটি বলে দিই।
প্রশ্ন : পরে যদি মনে করেন চিকিৎসা দরকার, কখন সেই চিকিৎসা করা হয়?
উত্তর : যে ১০ ভাগ বাচ্চার রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচিউরিটি তৈরি হলো, এর মধ্যে আবার ১০ ভাগের চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। বাকি ৯০ ভাগের ফলোআপ করতে হবে। ধীরে ধীরে এটা ঠিক হয়ে যায়।
রেটিনা তৈরি হয়ে যায়। যেসব বাচ্চার রেটিনা তৈরি হচ্ছে না, আমরা কিছুদিন পর্যেক্ষণ করি বা এটা হয়তো আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। রেটিনা হয়তো তৈরি হয়নি বা অস্বাভাবিক রেটিনা তৈরি হচ্ছে।
সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বিভিন্ন মেমব্রেন তৈরি হচ্ছে। জন্মের দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে রোগীর সাধারণত আমাদের ডাকার কথা। রেটিনা বিশেষজ্ঞকে ডাকা। যদি সে এ সময়ের মধ্যে আমাদের ডাকে, আমরা তার রেটিনা পরীক্ষা করে তার পর্যায়টা ঠিক করি, প্রাথমিক নাকি মাঝামাঝি। এর সঙ্গে রোগীর সাধারণ অবস্থারও উন্নতি করতে হয়। এর সঙ্গে আবার রেটিনা বৃদ্ধির খুব সম্পর্ক রয়েছে। যদি স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি হয়ে যায়, তাহলে আমাদের চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে যদি তার রোগটি বাড়তে থাকে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা লেজার চিকিৎসা করে থাকি। লেজার চিকিৎসা করলে আবার খারাপ হবে না।
প্রশ্ন : সেই চিকিৎসা কি আপনারা তখনই শুরু করেন?
উত্তর : লেজার মেশিন আছে, একটি দল আছে। এসব নিয়ে আমরা বাচ্চার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চলে যাই। এরপর আমরা লেজার করে দিই। হয়তো লেজার কয়েক ধাপে করতে হয়। লেজার করে যেই লাভটা হবে, আবার তার দৃষ্টিটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। যতটুকু দৃষ্টি আছে, এটা সংরক্ষিত হবে। যদি এর পরে চলে আসে যে আমাদের প্রাথমিক অবস্থায় ডাকা হয়নি বা কোনো কারণে চিকিৎসক দেখানো হয়নি, তখন আমরা এক ধরনের ইনজেকশন দিই। বেশি বেড়ে গেলে সার্জারি করতে হয়। সার্জারি করলেও রোগীর চোখটি আমরা ততটুকু ভালো করতে পারি না। আসলে সঠিক সময়টি এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন : সার্জারির পর কতটুকু ঠিক হচ্ছে, এটি বোঝেন কীভাবে?
উত্তর : প্রাথমিকভাবে এই রোগী যখন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট থেকে চলে যায়, লেজার চিকিৎসা যদি হয়ে যায় তো ভালো। যদি এটি না হয়ে সার্জারি লাগে।
সার্জারি বিভিন্নভাবে করতে হয়। ভেতরে অনেক সময় তেল দিতে হয়, তেল দিয়ে অনেক সময় পুনরায় সার্জারি করে বের করতে হয়। এরপর যখন তার বয়সটা বাড়ে, তখন চশমা দিতে হয়। চশমা দিয়ে আমরা দেখি তার বৃদ্ধিটা কতটুকু হচ্ছে।