শিশুদের প্রয়োজনীয় টিকা

টিকা শিশুকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখে। তাই প্রয়োজনীয় টিকাগুলো দেওয়া জরুরি। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৭১তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. মশিউর রহমান। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় টিকাগুলো কী কী?
উত্তর : প্রথমে একটু বলি, ইংরেজিতে একটি বাক্য আছে, প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর। অর্থাৎ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। যেকোনো কিছুর ক্ষেত্রেই কথাটি প্রযোজ্য। সেই ক্ষেত্রে টিকা একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এই প্রতিরোধটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অসুখ যেন না হয় সে জন্য প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিরোধটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রতিরোধ শুরু হয়েছিল স্মল পক্সের (গুটি বসন্ত) ভ্যাকসিন দিয়ে। ব্হু ইতিহাস গড়েছে এই ভ্যাকসিন। স্মল পক্স হলে কিন্তু বাঁচত না। এখন তো স্মল পক্স শেষ হয়ে গেছে। সারা পৃথিবীতে যখন স্মল পক্সের ভ্যাকসিন দেওয়া হলো, এর পর থেকে স্মল পক্স একদম শেষ।
পোলিওর কথা আমরা শুনেছি। প্যারালাইজড হয়ে যায়। এটি প্রায় শেষ পৃথিবীতে। বাংলাদেশ থেকে ২০০০ সালে বিদায় নিয়ে নিয়েছে। তবু পৃথিবীতে আরো দু-তিনটি দেশে রয়েছে। এটিও বিদায় নিয়ে নেবে। এখন তো অনেক টিকা আমাদের সরকারই দিচ্ছে অনুদান নিয়ে। ইপিআইয়ের যে প্রোগ্রাম বলে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুদান নিয়ে টিকা দিচ্ছে। এই টিকা ক্ষেত্রে এখন যেগুলো দিচ্ছে, ১০ বছর আগে সেগুলো ছিল না। অনেক কম ছিল। ১৫ বছর আগে মাত্র ছয়টি ছিল। এখন প্রায় আট-নয়টি দিচ্ছে। এই টিকাগুলো কিন্তু আসলে যথেষ্ট নয়। পর্যাপ্ত হোক বা অপর্যাপ্ত হোক টিকা কিন্তু নিয়মিত দিতে হবে। এই বিষয়ে মা-বাবার দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নেই। প্রথমে জন্মের পরপর পোলিও খাইয়ে দিতে পারি। অথবা ছয় সপ্তাহের সময় অনেকগুলো শুরু হলো। এর ভেতর ডিপথেরিয়া, যেই রোগ এখন প্রায় নেই বললেই চলে।
চল্লিশ বছর আগের কথা। একটু গলা ব্যথা হলেই আমরা চিন্তা করতাম ডিপথেরিয়া কি না। এখন তো ডিপথেরিয়াকে আমরা দেখি না বললেই চলে। ধনুষ্টঙ্কার আরেকটি। ধনুষ্টঙ্কার আক্রান্ত বাচ্চাদের কত চিকিৎসা করেছি আমি। এখন ধনুষ্টঙ্কার নেই বললেই চলে।
এরপর যেমন হুপিং কফ। এটাও অনেক কমে গেছে। হাম, রুবেলা এগুলোও প্রায়ই বিদায় নিয়েছে। দু-একটা ইদানীং আমি এই বছরে পেয়েছি। এর মানে হলো জনগণের এই বিষয়ে আরেকটু বেশি সজাগ হতে হবে। হাম, রুবেলার টিকা যেন নিয়মিত তারা নয় মাসে ও ১৫ মাসে দিয়ে দেয়, যাতে হাম-রুবেলা বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেয়। এর জন্য জনগণকে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে। তাদের সজাগ হতে হবে।