শিশুর ‘অলস চোখ’ কী?

চোখের একটি প্রচলিত সমস্যা ‘অলস চোখ’। সাধারণত শিশুদের এই সমস্যা হয়ে থাকে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫২৪তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শাহীন রেজা চৌধুরী। বর্তমানে তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অলস চোখ বা আইডেল আই- এটি আসলে কী।
উত্তর : আমরা সাধারণভাবে বুঝি একটি চোখ ভালো। আরেকটি চোখ খারাপ। যেই চোখ খারাপ একে আমরা অলস চোখ বলি। এই অলস চোখে এমন একটি সমস্যা, চিকিৎসকও কিছু দেখে না বাইরে থেকে। আর রোগীও বোঝে না যে ওই চোখে সমস্যা। রোগীও বুঝতে পারে না তার এক চোখে কম দেখে, পরীক্ষা না করলে চিকিৎসকও বলতে পারে না তার বাইরে থেকে সমস্যা হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এগুলো বোঝা যায় না। কিছু কিছু কারণ আছে—ট্যারা চোখ, ছানি আছে, চোখে কর্নিয়া অ্যালোপাসিটি আছে, চোখের পাতা নিচে নেমে গেছে; এসব কারণ হলে আমরা আগে থেকে বুঝতে পারি। এসব কারণ ছাড়া বোঝার কোনো উপায় নেই যে একটি শিশুর অলস চোখ আছে।
প্রশ্ন : অলস চোখ কোন বয়সে হয় বা কখন এটি বোঝা যায়?
উত্তর : আমাদের চোখের ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড বলতে বোঝায়, জন্মের পর থেকে ছয় বছর পর্যন্ত। এই ছয় বছরের ভেতর একটি চোখের পুরো পাওয়ার চলে আসবে। প্লাস ৬০ ডায়াপ্টার। আর আমরা যখন পাওয়ারকে কাগজে লিখি, ৬/৬ লিখি ভিশিন। ৬/৬ হবে ছয় বছরে, যার পাওয়ার হবে ৫ ডায়াপ্টার। যদি কারো ছয় বছরের ভেতরে ৬০ ডায়াপ্টার না হয়ে থাকে, এটা ছয়ের পরে আর হবে না। তাই ছয় বছর বয়স পর্যন্তই অলস চোখ হওয়ার সময়।
প্রশ্ন : এর পেছনে কারণ কী?
উত্তর : কিছু কারণ দেখা যায়—যেমন ছানি, কর্নিয়া অ্যালোপাসিটি। আর চশমা লাগে, কিন্তু চশমা হয়তো পরে না। অনেক বাচ্চাদের ছোট বয়সে চশমা লাগলে অভিভাবকরা হয়তো বলেন, এত ছোট বয়সে কিসের চশমা। তবে চশমা দেওয়ার সময় তাঁকে বুঝিয়ে বলতে হবে, চশমা না দিলে আপনার শিশুর চোখ অলস হওয়ার একটি আশঙ্কা থাকবে। আর চশমা লাগলে, সেটি না পরলে চোখ ট্যারা হওয়ার একটি আশঙ্কা আছে। তাই এই কারণগুলো খুঁজে যে কারণের জন্য অলস চোখ হচ্ছে, ছয় বছরের মধ্যে সেটার চিকিৎসা করতে হবে। ছয় বছর পরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই। ছয় বছরের মধ্যে যদি আমি ধরতে পারি, তার অলস চোখ আছে, ১০ বছর পর্যন্ত চিকিৎসা করা যায়।