কখন ‘আই লাভ ইউ’ বলার সঠিক সময়?

‘তুমি একা! তোমারে কে ভালোবাসে!—তোমারে কি কেউ/ বুকে করে রাখে! জলের আবেগে তুমি চলে যাও—/ জলের উচ্ছ্বাসে পিছে ধু ধু জল তোমারে যে ডাকে!’—প্রেমের রঙিন প্রজাপতি কাঁধের ওপর দিয়ে বারবার ঘুরে ফিরলে কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার চরণের মতো কত প্রশ্ন, কত কাতরতা ভর করে মনে।
তারপর স্বপ্নবুনন, প্রত্যাশা আর আবেগের প্রগাঢ় মন্থন। হয়তো আরো কিছু, যা অপ্রকাশ্য-অবর্ণনীয়। এমনকি অধরাও। অনেকে আছেন, যাঁরা নিজকথা নিজমনে গুনগুন করে চলেন, কিন্তু মুখ ফোটে না। বিশেষ করে, কখন হৃদয়ারাধ্যের সামনে বলেই ফেলবেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি!’ অনেক বার বলতে চেয়েও হয়তো ফিরে গেছেন কেউ। কেউ হয়তো কখনো বলেননি তাঁর আরাধ্যাকে। জীবনানন্দের ‘নীল হাওয়ার সমুদ্রে স্ফীত মাতাল বেলুনের মতো’ সেই কথা উড়ে গেছে সুদূরে। কিন্তু না, বলেই ফেলুন না ওই মাতাল ত্রিশব্দ। তাহলে প্রশ্ন আসে, প্রেয়সীকে ‘ভালোবাসি’ বলার সঠিক সময় কোনটি?
ভারতের বিখ্যাত সাময়িকী ফেমিনার এক প্রতিবেদনে সঙ্গীকে ওই পরম তিন শব্দ বলার সঠিক সময় সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আসুন, চোখ বুলিয়ে নিই—
নিজের অনুভূতি বিশ্লেষণ করুন
একেকজন একেকভাবে প্রেমপ্রস্তাব দিয়ে থাকেন আর তার ধরনও হয় আলাদা। কেউ বেশ আয়োজন করে বলেন। কেউ কিছুটা প্লেটোনিক ভঙ্গিতে। কারো ভঙ্গি আবার তেমন রোমান্টিক নয়। যা হোক, নিজের অনুভূতি আগে বিশ্লেষণ করুন। যদি আপনাদের ডেটিং সবে শুরু হয়, তবে সময় নিন। একে তুঙ্গে নিয়ে যান। সঙ্গীকে হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করুন। প্রেমিক বা প্রেমিকাকে ওই তিন শব্দ বলার আগে সবটুকু ভেবে নিন।
পরোক্ষভাবে বলার চেষ্টা করুন
একেবারে যে উচ্চস্বরে ভালোবাসার কথাটি বলতে হবে, এমন নয়। পরোক্ষভাবে, আকারে-ইঙ্গিতেও আপনি সেটা প্রকাশ করতে পারেন। আর সঙ্গীও সেটা বুঝতে পেরে হয়তো সে দিক থেকেও কোনো ইঙ্গিত দিতে পারে। সরাসরি বলতে না পারলেও এটা তো বলতে পারবেন, সঙ্গীর কোন দিকটি আপনার ভালো লাগে, তার স্থান আপনার কাছে কোথায়। যখন একসঙ্গে থাকবেন, তার ভেতর নিরাপত্তাবোধ তৈরি করুন। তার সমস্ত সিদ্ধান্তের প্রতি সহায়ক হোন। সরাসরি ‘আমি তোমাকি ভালোবাসি’ বলার চেয়ে ‘আমার মনে হচ্ছে, আমি খুব বেশি জড়িয়ে পড়ছি এবং তুমি ও আমাদের সম্পর্কটা নিয়ে আরো সিরিয়াস হয়ে উঠছি’ বলাটা কার্যকর হতে পারে।
কে আগে বলবে?
একটি প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে, কে আগে প্রস্তাবটা দেবে? এ ধরনের চিন্তা মোটেও করবেন না। সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, প্রেমময় আবেগ প্রকাশে এত দেরি করতে নেই। নিজের ওপর এবং নিজের আবেগের ওপর ভরসা রাখুন। যদি ভেতর থেকে অনুভব হয়, ওই তিন শব্দ বলা দরকার; তবে বলে ফেলুন।
একটি কথা কিন্তু মনে রাখতে হবে, ‘আই লাভ ইউ’ কীভাবে বলবেন, তা জানার জন্য কোনো পাঠ্যবই বা গাইড নেই। আসলে এটা কোনো ছকবন্দি বিষয় নয়। নিজের আবেগের সত্যতা উপলব্ধি করুন। সঙ্গীর মন বোঝার চেষ্টা করুন। যা করছেন, হৃদয় দিয়ে করুন। ধরা যাক, আপনার আবেগে সাড়া দিল না সঙ্গী, তো কী হয়েছে? আপনার মনোবাসনা তো আর মিথ্যে নয়!