নারী কেন পুরুষের ধৈর্যের পরীক্ষা নেন?

প্রত্যেক নারী অন্য নারীর থেকে আলাদা। কিন্তু তাঁদের কৌতূহলী আচরণ নিয়ে অনেক সময়ই দ্বিধার মধ্যে পড়ে যান পুরুষ। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুরুষদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া সব নারীরই অভ্যাস। সে যে প্রকৃতিরই হোক না কেন, পুরুষদের এমন পরীক্ষায় ফেলে তাঁরা বেশ আনন্দ পান। আর নারীদের ধারণা, সঠিক জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা তাঁদের অনেক সাহায্য করে।
এখন প্রশ্ন হলো, নারীরা কীভাবে পুরুষদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেন? ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়ার অনেক ধরনের পদ্ধতিই জানেন নারী। আর এই পদ্ধতিগুলো তাঁরা নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছেন। যেমন ধরুন, কোনো নারী আপনার কাছে জানতে চাইল, ডেটের জন্য তুমি কোথায় যেতে চাও? তখন আপনার উত্তর হওয়া উচিত, ‘এটা একটা সারপ্রাইজ’ অথবা ‘কিছুক্ষণ পরেই জানতে পারবে’। কিন্তু যদি আপনি এর উত্তরে বলেন, ‘তুমি যেখানে যেতে চাও সেখানে যাব।’ তাহলে সে ধারণা করবে, আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। পুরুষদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়ার এমনটা হাজারো উপায় রয়েছে নারীদের কাছে।
কীভাবে নারীরা পুরুষদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেন, তার কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে বোল্ডস্কাই ওয়েবসাইটে। নারীদের এই পরীক্ষার ‘ফাঁদে’ পা দিতে না চাইলে এই পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন—
১. আপনাকে ঈর্ষান্বিত করতে
আপনার প্রেমিকা কি আপনার বন্ধুর সঙ্গে অনেক বেশি কথা বলেন? আর আপনার সামনেই এই কাজটি সে বেশি করে করেন? তাহলে বুঝে নেবেন, আপনাকে ঈর্ষান্বিত করার জন্যই তিনি এমনটা করে থাকেন। আর আপনার মতো এমন অনেক পুরুষ আছেন, যাঁরা এই ফাঁদে অনায়াসে পা দেন। এখন আপনিই ভেবে নিন, এই ফাঁদে নতুন করে আর পা দেবেন কি না?
২. যেকোনো জিনিস নিয়ে চিন্তা করতে অনেক সময় নেয়
এটা সবচেয়ে বিরক্তিকর এবং প্রচলিত এটি পরীক্ষা, যা সব নারীই করে থাকেন। আর বেশির ভাগ পুরুষই এর ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন। যেকোনো বিষয়ে মতামত নিতে অথবা সাধারণ সিনেমা দেখতে যাওয়ার সময় নিয়ে তিনি অনেকটা সময় পার করে দেন। অথচ আপনাকে সঠিক মতামত না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন। ‘আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবছি’—এ কথা বলে দিব্যি তিনি আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ে চলছেন। আর আপনিও তাঁর পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। বিষয়টি বেশ মজার। তাই না?
৩. আবেগজড়িত কথা
আপনি হয়তো চরম রেগে আছেন, কিন্তু প্রেমিকার আবেগজড়িত কথার কাছে আপনার রাগ গলে পানি হয়ে যায়। আর এটা নারীরা খুব ভালোভাবেই জানেন, যেকোনো কঠিন মুহূর্তে সামান্য আবেগের কথা বললেই ঝামেলা শেষ। এ কাজটি তিনি হরহামেশাই করে থাকেন। আর আপনিও ধৈর্য ধরে তাঁর সেই কথাগুলো শুনতে বাধ্য হন। এই যেমন ধরুন, একদিন হুট করেই তিনি বললেন, ‘তুমি আর আগের মতো আমাকে ভালোবাসো না।’ ঠিক সে মুহূর্তে আপনার চেহারার ভাবখানা দেখে তিনি মনে মনে খুবই আনন্দ পান; কিন্তু প্রকাশ করেন না। আর আপনি অসহায়ের মতো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়ান।
৪. শপিংয়ের বিড়ম্বনা
এই বিষয়টিতে পুরুষদের বেশ ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। অনেক নারীই শপিংয়ে গিয়ে বলেন না, ‘এটি আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। আমাকে কিনে দাও।’ বরং তাঁরা একটু ঘুরিয়ে বলেন, ‘দেখ, এই পোশাকটি কী সুন্দর। তাই না?’ তখন আপনার উত্তর হওয়া উচিত, ‘হ্যাঁ, আসলেই সুন্দর। আমরা পরেরবার এটা কিনব। ঠিক আছে?’ এমন উত্তর দিলে আপনি হয়তো বেঁচে যাবেন। না হলে শপিংয়ের এই রেশ আপনার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে।
৫. কোনো কিছু পরিষ্কার করে বলেন না
নারীরা একটু লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকে। তাই তিনি পুরোপুরিভাবে নিজের কথা খুলে বলেন না। তিনি কী চান, এটা জানার জন্য আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। আর এই সময়টাতে তিনি আপনার ব্যক্তিত্ব এবং আচরণ সম্বন্ধে ধারণা করে নেন। যদিও তিনি কিছুই পরিষ্কার করে বলেন না, তার পরও মনে মনে চান আপনি যেন সবকিছু বুঝে নেন।
এমন অনেক পদ্ধতি নারীরা নিজেরাই তৈরি করেন, যেখানে পদে পদে পুরুষদের ধৈর্য ধরতে হয়। তবে বিষয়টি যে একেবারেই নেতিবাচক, তা কিন্তু নয়। আপনাকে বেশ ভালোভাবে চেনার জন্যই তিনি এমনটা করেন। যদি তিনি আপনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন এবং আস্থা খুঁজে পান, তাহলে আপনার প্রতি তাঁর সম্মানবোধ বেড়ে যাবে এবং আপনাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা চিন্তাও করবে না। তাই একটু না হয় নারীদের সন্তুষ্টির জন্য ধৈর্য ধরলেন।