ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎ শিল্পীরা

মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই উৎসবকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার মৃৎ শিল্পীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের হিরণ গ্রামের ৪৫টি পাল পরিবারের সদস্যরা যেকোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে থাকেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হিরণ গ্রামের পাল পাড়ায় গিয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সের নারী-পুরুষদের মাটির বিভিন্ন খেলনা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। কেউ কাঁদামাটি দিয়ে তৈরি করছে পুতুল, কেউ ব্যস্ত খেলনা তৈরিতে। অনেককে দেখা যায়, এসব রোদে শুকাতে। কেউ আবার রঙ তুলির আঁচড়ে এসব সামগ্রীকে রাঙিয়ে তুলছেন।
বলাই পাল বলেন, বর্তমানে প্লাস্টিকের বিভিন্ন খেলনা তৈরি করছে অনেকে। মাটির দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে আগের তুলনায় মাটির তৈরি এসব সামগ্রী বিক্রিতে লাভ হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা এই কাজ করে আসছি। বছরের অন্যান্য উৎসবের সময় মাটির হাতি, ঘোড়া, বাঘ, হরিণ, ময়ূর, কাঁঠাল, আম, পেপে, আপেল, হাড়ি, পাতিল ও মাটির ব্যাংকসহ বিভিন্ন খেলনা তৈরি এবং বিক্রি করি।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিশ্বজিত পাল বলেন, ঈদ উপলক্ষে বর্তমানে আমাদের কাজের খুব চাপ। এজন্য লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে আমিও বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজ করি।
সমাপ্তি পাল বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে বাড়িতে মাটির জিনিসপত্র তৈরির কাজের চাপও বেশি তাই আমি মাটির সামগ্রীগুলো রঙয়ের কাজ করছি।
দেবী রাণী পাল বলেন, এখন সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। আগের মত মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদাও নেই। তাই সরকারিভাবে আমাদেরকে সহযোগিতা করলে পুরাতন এই শিল্পটাকে ধরে রাখতে পারতাম।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল ইসলাম শুভ বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প ছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মৃৎ শিল্পীদের সহযোগিতা করার সুযোগ ছিল। বর্তমানে এই প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে। পরবর্তীতে প্রকল্পটি চালু হলে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।