১৩০০ শতাব্দীতে নির্মিত সিন্দুর্না শালবাড়ী মসজিদ

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে ঐতিহাসিক ৭০০ বছরের পুরোনো সিন্দুর্না শালবাড়ী জামে মসজিদ। মসজিদটি উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার মধ্যে অন্যতম। এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি উপজেলার রাতোর ইউনিয়ন ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সিন্দুর্না গ্রামের সীমান্তে অবস্থিত।
গহীন শালবনের মাঝখানে মনোরম পরিবেশে দাঁড়িয়ে থাকা ১৩০০ শতাব্দীর নির্মিত এই মসজিদটি এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাত্র ৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৯ ফুট প্রস্থের এ মসজিদের মিনারসহ উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট।
এক সময় ধর্ম প্রচারের জন্য ভারতের অঙ্গরাজ্য পাটনা বিহার থেকে এখানে আসেন শমসের তালুকদার নামের একজন ধর্মপ্রাণ বুজুর্গ। তার স্ত্রী সন্তান কেউ ছিলেন না এখানে। একাই ওই এলাকার শালবাগানে নির্মিত করেন এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি।
মসজিদটির ভিতরে রয়েছে বাহারি ডিজাইনের নকশা একেকটি পাথরে খোদাই করা রয়েছে আরবি বর্ণমালা। পাশেই রয়েছে একটি অলৌকিক কূপ, সেখান থেকেই পানি নিয়ে ওযুসহ ওই এলাকার মানুষের পানির চাহিদা পূরণ করতো। মসজিদটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৯ নম্বর রায়পুর ও রানীশংকৈল উপজেলার রাতোর ইউনিয়ন ঘেঁষা হওয়ায় দুই উপজেলার তিনটি গ্রামের মানুষের একমাত্র মসজিদ ছিল।
তৎকালীন সময়ে এই মসজিদে সাতজন মানুষ নামাজ আদায় করতে পারত। পরবর্তীতে কালের বিবর্তনে এখন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় মসজিদটির সঙ্গে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করে দুটি মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
কথিত আছে, এই ধর্মযাজক এতটাই পরহেজগার ছিলেন যে, জিনদের সঙ্গে তার সরাসরি আলোচনা হত। জিনের সহযোগিতায় নির্মিত হয়েছে নাকি মসজিদটি । প্রত্যেক মহরমের সময় এই মসজিদটি ঘিরে একটি ওরস শরীফ পালিত হয়। মসজিদটির একটু অদূরে গেলেই চোখে পড়ে ওরশ শরীফ। ভাঙ্গা জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওরশ শরীফের ঘরটি। এলাকাবাসীর প্রয়োজনে মসজিদটি সংস্কার করা হলেও ওরশ শরীফের কাজে ব্যবহৃত ঘরটির করা হয়নি কোনো সংস্কার। যদিও সে আমলে জনবসতি কম থাকায় ছোট পরিসরে নির্মিত হয় মসজিদটি। তবে এখন এটি দিগুণ করে সংস্কার করে সংযোজন করা হয়েছে নতুন একটি ভবন। যার ফলে একসঙ্গে ৫০০ থেকে ৬০০ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন।