ব্যাংক-বিমা খাতের দরপতনে উত্থানে ফিরছে না পুঁজিবাজার

ব্যাংক-বিমা এই দুই খাতের ৯৪ প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে আজ ৭৮টি বা ৮৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে আজ রোববার (১০ আগস্ট)। দুই খাতের কোম্পানির শেয়ারের এই ধরনের দরপতনের প্রভাবে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের সূচক ধসে লেনদেন শেষ হয়েছে আজ।
এদিন প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৭ পয়েন্ট। এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ বাজারে মূলধন পরিমাণ কমেছে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে এদিন কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্যান্য খাতের কোম্পানির তুলনায় ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠানের মূলধন বেশি, শেয়ার সংখ্যাও বেশি। এই দুই খাতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার যেদিন দরপতন হয় সেইদিন পুঁজিবাজারে চিত্রও মন্দা থাকে। এই পর্যন্ত বিমা খাতের ৫৮টি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আজ ৫২টি বা ৯০ শতাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। ব্যাংক খাতের ৩৬টি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আজ ২৬টি বা ৭২ শতাংশ ব্যাংক কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩৪টি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আজ ২৬টি বা ৭২ শতাংশ ব্যাংক কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট খাতের ৮৫ শতাংশ, আইটি খাতের ৭৩ শতাংশ এবং টেলিকম খাতের ৬৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটে এদিন। বেশির ভাগ খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দরপতন হয়েছে আজ। অবশ্য এদিন শুধুমাত্র পাট খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর উত্থান হয়েছে। ৩টি পাট কোম্পানির মধ্যে সবকয়টির দর উত্থান হয়েছে।
ডিএসইতে আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৮মিনিটে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উত্থান হয় ১৭ পয়েন্ট। বেলা বাড়ার পর উত্থান গতি পতনে ফিরে। লেনদেন শুরুর প্রথম ৩৬ মিনিটে ডিএসইএক্স পতন হয় ২৮ পয়েন্ট। পরে উত্থানে গেলেও ফের পতনে ফিরে সূচকটি। লেনদেন শেষে এদিন সূচক ডিএসইএক্স পতন হয় ৫৭ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিন শেষে দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ৩৫১ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্টে। এদিন ডিএস-৩০ সূচক ৩১ দশমিক শূন্য পাঁচ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬৬ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসইএস সূচক আট দশমিক শূন্য সাত পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬২ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে।
আজ রোববার লেনদেন হয়েছে ৭৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৭০৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার। রোববার ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ১২ হাজার ৯৪০ কোটি আট লাখ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার মূলধন ছিল সাত লাখ ১৫ হাজার ৭৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। আজ লেনদেন হওয়া ৪০১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৯টির এবং কমেছে ২৪৭ টির বা ৬২ শতাংশ। শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৫টির।
আজ লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ওরিয়ন ইনফিউশনের ২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা, মালেক স্পিনিংয়ের ২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, সিটি ব্যাংকের ১৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, হাক্কানি পাল্পের ১২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, সোনালী পেপারের ১১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং বেক্সিমকো ফার্মার ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আজ দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে এআইবিএল ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। কোম্পানিটির দর কমেছে ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এদিন দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে এপেক্স ট্যানারির শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ।