টাইব্রেকারে সুইসদের স্বপ্ন ভেঙে সেমিফাইনালে স্পেন
শেষ ষোলোর ম্যাচে টাইব্রেকারেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে বিদায় করেছিল সুইজারল্যান্ড। কোয়ার্টার ফাইনালেও তাদের ম্যাচ গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। কিন্তু এবার আর পেনাল্টি শুট আউটের সুফল পেল না সুইসরা। টাইব্রেকারে কপাল পুড়েছে তাদের। সুইসদের স্বপ্ন ভেঙে প্রথম দল হিসেবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে পা রেখেছে লুইস এনরিকের স্পেন।
রাশিয়ার সেন্ত পিটার্সবুর্গে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত স্পেন ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচের নির্ধারিত সময় শেষ হয় ১-১ গোলের ড্রতে। এরপর অতিরিক্ত সময় ৩০ মিনিটেও আসেনি কোনো গোল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। কিন্তু টাইব্রেকারের লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে স্পেন। সুইসদের ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমির টিকেট নিশ্চিত করে স্প্যানিশরা। ২০১২ সালের পর আরও একবার ইউরোর সেমিফাইনালে উঠল স্পেন। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম বা ইতালি।
এদিন ম্যাচের ৭৩ ভাগ সময়ই বল দখলে রেখেছে স্প্যানিশরা। আক্রমণেও এগিয়ে ছিল স্প্যানিশরা। পুরো ম্যাচে ২৮ বার আক্রমণ করে তারা, যার ১০টিই ছিল অনটার্গেট শট। কিন্তু সুইস গোলরক্ষকের বাধা এড়াতে পারেনি স্পেন। পুরো ম্যাচে ঢাল হয়ে ছিলেন সুইস তারকা ইয়ান সোমার। এ ছাড়া অতিরিক্ত সময়েও বেশ কিছু দারুণ সুযোগও সৃষ্টি করেছিল স্পেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ইয়ান সোমারের বাধা এড়িয়ে লক্ষ্যবেধ করতে পারেনি।
ম্যাচের শুরুতে সাফল্য পেয়েছিল স্পেন। শুরুর একাদশ থেকেই জর্দি আলভাকে মাঠে নামান স্প্যানিশ কোচ। আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন আলভাও। অষ্টম মিনিটেই দলকে লিড এনে দেন। ডান দিক থেকে কর্নার নেন কোক। সতীর্থের কর্নার ডি বক্সের বাইরে পেয়ে যান আলভা। সুযোগ হাতছাড়া না করে দারুণ হেড নেন তিনি। তবে গোলের মর্যাদা পাননি তিনি। তাঁর হেড নেওয়া বল লেগে যায় প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় জাকারিয়ার গায়ে। তাই সেটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে ধরা হয়। তবে বড় ভূমিকা ছিল আলভারই।
১৯ মিনিটে ফের সুযোগ পায় স্পেন। কর্নার থেকেই শট নেন কোক। কিন্তু ক্রসবারে লেগে গেলে রক্ষা পায় সুইসরা। পাঁচ মিনিট পর আরেক দফায় সুইজারল্যান্ডকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক।
৩৪ মিনিটের সমতায় ফেরার সুযোগ পায় সুইসরা। আকাঞ্জি স্পেনের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন। তবে তাঁর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কয়েক মিনিট বাধে ফের ব্যর্থ হয় সুইজারল্যান্ড। ৩৯ মিনিটের মাথায় স্পেনের পোস্ট লক্ষ্য করে উইডমারের নেওয়া শট মাঠের বাইরে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধে গোলহীনই থাকতে হয় সুইজারল্যান্ডকে।
বিরতির পর অবশ্য লড়াইয়ে ফিরতে দেরি হয়নি সুইসদের। ৬৮ মিনিটে শাকারির গোলে ১-১ সমতা ফেরায় সুইজারল্যান্ড। লাপোর্তে ও পাউ তোরেসের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগে স্পেনের বক্সের ঠিক সামনে বল পেয়ে যান ফ্রেউলার। তিনি বল বাড়িয়ে দেন শাকিরির কাছে। সতীর্থদের পাস পেয়ে সুযোগ হাতছাড়া করেননি শাকিরি। ডান পায়ের দারুণ শটে দলকে সমতায় ফেরান তিনি।
গোল করার উচ্ছ্বাস না শেষ হতেই বড় ধাক্কা খায় সুইজারল্যান্ড। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে স্প্যানিশ তারকা মোরেনোকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে দলটির খেলোয়াড় রেমো ফ্রেউলার। ফলে বাকি সময় ১০ জনের দলে পরিণত হয় সুইসরা।
অবশ্য ১০ জনের দল নিয়েও দারুণ লড়াই করেছে সুইজারল্যান্ড। মাঝে গোল করা শাকিরিকে তুলে নেন কোচ। এরপরও ৯০ মিনিট পর্যন্ত রক্ষণ আগলে রেখেছে তারা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর ইনজুরি সময়েও গোল পায়নি কোনো দল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু ওই ৩০মিনিটেও গোল না আসলে শেষ পর্যন্ত ফল আসে টাইব্রেকারে।
ইউরো ২০২০-এর শেষ ষোলোর ম্যাচে ফ্রান্সকে পেনাল্টি শুট-আউটে হারিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নেয় সুইজারল্যান্ড। অন্যদিনে স্পেন ৫-৩ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে চলতি ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট অর্জন করে। এবার সেমিফাইনালে যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে সুইজারল্যান্ড ও স্পেন।