সাবধান ভারত, আগামীতে তোমরাই!

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান শেষবারের মতো ভারতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল বিশ্বকাপের সময়। সেমিফাইনাল থেকে ভারতের বিদায়ের পর দুই দেশের ক্রিকেট সমর্থকরা বিসিসিআইয়ের দপ্তরে ফোন করে শুনিয়েছিলেন ‘মওকা মওকা’ গান। তারপর সম্প্রতি আবারও ভারতীয় গণমাধ্যমে একসঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নাম। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে বাংলাদেশের হাতে নাস্তানাবুদ হতে দেখে হয়তো উল্লাসই করছেন ভারতের ক্রিকেট সমর্থকরা। কিন্তু তাঁদের যে এখন উল্লাস না, বরং চিন্তিত হওয়ার সময়- সেটাই স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়া টাইমসের একটি প্রতিবেদনে।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচেই সহজ জয় দিয়ে পাকিস্তানকে ডুবিয়েছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায়। একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও দাপুটে নৈপুণ্য দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফি বাহিনী। মাশরাফি-সাকিব-তামিম-মুশফিকদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখার পর ইন্ডিয়া টাইমসের প্রতিবেদনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে : ‘বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের হোয়াইটওয়াশ হওয়ার ঘটনায় কেন ভারতের খুব বেশি উচ্ছসিত না হয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত’।
ব্যাটে-বলে বাংলাদেশের দারুণ নৈপুণ্যের চিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ কিভাবে সিরিজে আধিপত্য বজার রেখেছে তা বোঝার জন্য অল্প কিছু তথ্যে নজর দেওয়া যেতে পারে। তিন ম্যাচ মিলিয়ে তারা পাকিস্তানের চেয়ে ৮১ রান বেশি করেছে। পাকিস্তানের উইকেট নিয়েছে ২৬ বার। দুইবার অলআউট করে দিয়েছে ২৫০ রানের মধ্যে। প্রথম ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে ৭৯ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রায় ১২ ওভার বাকি থাকতে জিতে গেছে ৭ উইকেটে। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের জয় পেয়েছে ১০ ওভার হাতে রেখে।’ একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও সাত উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিপক্ষ ভারত। আগামী জুনে একটি টেস্ট ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ভারতের। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ‘বিতর্কিত’ আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে ছিটকে যেতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। এবার নিজেদের মাটিতে সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নিশ্চয়ই মরিয়া হয়ে থাকবেন মাশরাফি-সাকিবরা।
দুইবারের বিশ্বকাপজয়ীদের কেন বাংলাদেশকে নিয়ে সাবধান হওয়া উচিত তা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ইন্ডিয়া টাইমসের এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ৫টা শতক হয়েছে। তার মধ্যে চারটিই করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তামিম ইকবাল করেছেন দুটি। তিনটি ওয়ানডেতেই বাংলাদেশের অন্তত একজন ব্যাটসম্যান শতক হাঁকিয়েছেন। সমালোচনার মুখে থাকা তামিম তিন ম্যাচে করেছেন ৩১২ রান। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনিই প্রথমবারের মতো পেরিয়েছিলেন ৩০০ রানের কোটা। ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ এই নিয়ে জিতল টানা আটটি ম্যাচ। ভারতের সত্যিই উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।’