প্লাস্টিকের জার্সি গায়ে খেলবেন রোনালদো-মুলাররা!

পরিবেশদূষণ রোধে এবার এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ক্লাব ফুটবলারদের সঙ্গে নিয়ে। সাগরে ভাসমান প্লাস্টিকসামগ্রী দিয়ে বানানো হচ্ছে বিশেষ ধরনের জার্সি। যেটা গায়ে দিয়ে খেলতে দেখা যাবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, থমাস মুলার, জাবি আলোনসোর মতো তারকা ফুটবলারদের। ইউরোপের সেরা দুই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ নভেম্বরে একটি করে ম্যাচ খেলবে এই সমুদ্রের প্লাস্টিক দিয়ে বানানো বিশেষ জার্সি গায়ে।
রিয়াল ও বায়ার্নের জার্সি ও অন্যান্য ফুটবল সরঞ্জাম সরবরাহ করে এডিডাস। প্লাস্টিক দিয়ে জার্সি বানানোর অভিনব উদ্যোগটাও এডিডাসের। আর এই কাজে এডিডাসকে সহায়তা করবে সমুদ্র রক্ষাবিষয়ক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, পারলে। সাগরে ভাসমান এই বর্জ্য প্লাস্টিকগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে মালদ্বীপের উপকূলীয় এলাকা থেকে।
প্লাস্টিক দিয়ে বানানো এই জার্সি গায়ে রিয়াল মাদ্রিদ খেলবে আগামী ২৬ নভেম্বর, স্পোর্টিং গিজনের বিপক্ষে। রিয়ালের এই জার্সিটা থাকবে তাদের চিরায়ত সাদা রঙেই। অন্যদিকে একই সপ্তাহে জার্মান লিগে লাল রঙের প্লাস্টিক জার্সি গায়ে হফেনহেইমের বিপক্ষে মাঠে নামবে বায়ার্ন মিউনিখ।
জার্সিতে ক্লাবের লোগো ও এডিডাসের সুপরিচিত তিন দাগের পিরামিড সদৃশ লোগোটি থাকবে। যদিও এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে ক্লাব ও স্পন্সররা। তাঁরা বলছেন, অস্থায়ী পোশাকে তাঁরা তাদের লোগো দেখতে চান না।
ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগে অবশ্য খুবই খুশি রিয়াল ও বায়ার্নের তারকা ফুটবলাররা। সমুদ্র ও পরিবেশরক্ষায় অবদান রাখতে পারছেন বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বায়ার্নের মিডফিল্ডার জাবি আলনসো। তিনি বলেছেন, ‘সমুদ্র রক্ষা ও সংরক্ষণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির এই দারুণ উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমি খুবই খুশি। আমি জানি এটা একটা বিশেষ সূচনার ইঙ্গিত বহন করছে।’ একই রকম কথা বলেছেন রিয়ালের ডিফেন্ডার মার্সেলোও, ‘সাগর হলো আমার হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের জায়গা। রিও ডি জেনিরোতে বেড়ে ওঠার দিনগুলোতে এবং ছোটবেলায় সাগরতটে খেলার স্মৃতিগুলো আমাকে খুব তাড়িত করে। এমন একটি প্রকল্পের অংশ হতে পারাটা সত্যি খুবই আনন্দের এবং যে ক্লাবকে আমি পছন্দ করি সেটি সমুদ্ররক্ষায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
পারলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আগামী বছরের মধ্যে সমুদ্র থেকে সংগৃহীত প্লাস্টিক দিয়ে ১০ লাখ জোড়া জুতা উৎপাদন করার পরিকল্পনা আছে এডিডাসের। যা উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় এক কোটি ১০ লাখ ফেলনা প্লাস্টিক বোতল পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করবে।
এডিডাস ও পার্লের এ রকম যৌথ উদ্যোগ এটাই প্রথম এবং তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রথম জুতোটি তৈরি হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে। এই চুক্তিটি এডিডাসকে তাদের দোকানগুলোতে প্লাস্টিক শপিংব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করাসহ বেশ কিছু বিশেষ বদ্ধমূল ব্যবসায় নীতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।