এশিয়া কাপ
নেপালকে হেসেখেলে হারিয়ে পাকিস্তানের শুভসূচনা

পাকিস্তান যা সংগ্রহ করেছে, নেপালের জন্য সেটি পাহাড়সমই বলা চলে। ফল কী হতে চলেছে, ম্যাচের প্রথমাংশে তা অনেকটাই অনুমেয় ছিল। ব্যাট হাতে বাবর-ইফতেখার ঝড়ের পর বল হাতে শাদাবের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয় নেপাল। আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে নেপালকে ২৩৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে আসরে শুভসূচনা করেছে পাকিস্তান।
মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেটে ৩৪২ রান তোলে তারা। জবাব দিতে নেমে ২৩.৪ ওভারে ১০৪ রানে অলআউট হয় নেপাল।
পাকিস্তানের রানের পাহাড় টপকাতে প্রথম ওভারেই আগ্রাসী হয়ে ওঠেন নেপাল ওপেনার কুশাল ভারতেল। শাহিন শাহকে দুটি চার মারেন চার বলের ব্যবধানে। পঞ্চম বলে তাকে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান আফ্রিদি। পরের বলে নেপাল অধিনায়ক রোহিত পাওডেলকে গোল্ডেন ডাকের তিক্ততা দেন আফ্রিদি।
প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারানো নেপাল এরপর আর থিতু হতে পারেনি ম্যাচে। নিয়মিত বিরতিতে হারিয়েছে উইকেট। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন সম্পাল কামি। আরিফ শেখ করেন ২৬ রান। এ দু’জন ছাড়া দুই অঙ্কের রান স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল গুলশান ঝা (১৩)।
পাকিস্তানের পক্ষে চার উইকেট শিকার করেন শাদাব খান। দুটি করে উইকেট পান হারিস রউফ ও আফ্রিদি।
এর আগে ব্যাট হাতে শুরুটা মন্থর হয় টুর্নামেন্টের সহ-আয়োজক পাকিস্তানের। ২৫ রানে দুই উইকেট হারানো পাকিস্তানের ইনিংস মেরামতে দায়িত্ব নেন বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দু’জনের ৮৬ রানের জুটিতে পাকিস্তান ম্যাচে ফিরতে শুরু করে।
দলীয় ১১১ রানে ৫০ বলে ৪৪ রান করে রানআউট হন রিজওয়ানও। সন্দ্বীপ লামিচানে আগা সালমানকে (৫) ফেরালে ১২৪ রানে চার উইকেটে পরিণত হয় পাকিস্তান। ম্যাচের তখন ২৮তম ওভার। আবারও খানিক ব্যাকফুটে চলে যায় তারা।
সেখান থেকে বাবর ও ইফতেখার মিলে একটু একটু করে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ক্রিজে থিতু হওয়ার পর হাত খুলে খেলতে থাকেন দুজনই। একটা সময় আড়াইশ রান যেখানে কঠিন মনে হচ্ছিল পাকিস্তানের জন্য সেখানে তারা থামে ৩৪২ রানে। বাবর-ইফতেখারের ব্যাট থেকে আসে ২১৪ রানের অনবদ্য জুটি।
ওয়ানডেতে নিজের ১৯তম সেঞ্চুরি করার দিনে বাবর ছাড়িয়ে যান নিজেকেই। ১৯ সেঞ্চুরির মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস খেলেন বাবর। ১৩১ বলে ১৪ চার ও চারটি ছক্কায় ১৫১ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেন বাবর। শেষ ওভারে সম্পাল কামির বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। একই ওভারে শাদাব খানকে (৪) বোল্ড করেন সম্পাল।
ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান ইফতেখারের এটি ওয়ানডেতে প্রথম শতক। ক্রিজে রীতিমতো ঝড় তোলেন তিনি। ৭১ বলে ১১ চার ও চারটি ছক্কায় ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
নেপালের পক্ষে সম্পাল পান দুই উইকেট। করন ও লামিচানে নেন একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : পাকিস্তান ৫০ ওভারে ৩৪২/৬। (ফখর ১৪, ইমাম ৫, বাবর ১৫১, রিজওয়ান ৪৪, সালমান ৫, ইফতেখার ১০৯* শাদাব ৪; সম্পাল ১০-১-৮৫-২, করন ৯-০-৫৪-১, গুলশান ৪-০-৩৫-০, ললিত ১০-০-৪৮-০, লামিচানে ১০-০-৬৯-১, দীপেন্দ্র ৬-০-৪০-০, কুশাল ১-০-১০-০)
নেপাল ২৩.৪ ওভারে ১০৪/১০। (কুশাল ৮, আসিফ ৫, রোহিত ০, আরিফ ২৬, সম্পাল ২৮, গুলশান ১৩, দীপেন্দ্র ৩, মাল্লা ৬, লামিচানে ০, করন ৭*, লোলিত ০; আফ্রিদি ৫-০-২৭-২, নাসিম ৫-০-১৭-১, রউফ ৫-১-১৬-২, শাদাব ৬.৪-০-২৭-৪, নাওয়াজ ২-০-১৩-১)
ফল : পাকিস্তান ২৩৮ রানে জয়ী।