অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে রিয়াল
ম্যানুয়েল নয়ার বীরত্বে লম্বা সময় পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিল জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ। কে জানত শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় নায়ক থেকে খলনায়ক বনে যাবেন এই জার্মান গোলরক্ষক। দারুণ সব সেভে পুরো ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ঠেকিয়ে রাখা নয়ারই কি না অন্তিম মুহুর্তে দলকে ডোবালেন। তার সেই ভুলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে রেকর্ড ১৮তম বারের মতো ফাইনালে কার্লো আনচেলত্তি শিষ্যরা।
গতকাল বুধবার (৮ মে) দিনগত রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলে জিতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলের অগ্রগামিতায় ওয়েম্বলির টিকিট কাটল রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল করেন হোসেলু।
প্রথমার্ধে ভাগ্য অনুকূলে না থাকায় এবং দুই গোলকিপারের বাধায় কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি। গোলের প্রথম প্রচেষ্টা চালায় বায়ার্ন। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে সার্জ গিন্যাব্রির শট যায় গোলবারের পাশ দিয়ে। তবে ম্যাচের প্রথম সুবর্ণ সুযোগ পায় রিয়াল। ১৪তম মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের শট পোস্টে লেগে তাদের হতাশ করে।
এরপর ২৮তম মিনিটে হ্যারি কেইনের চমৎকার ভলি বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করেন রিয়াল কিপার আন্দ্রে লুনিন। বিরতির আগে ভিনিসিয়াসের বাঁ দিক থেকে নেওয়া শট রুখে দিয়ে রিয়ালকে হতাশায় ডোবান নয়ার। তাতে প্রথমার্ধ শেষ হয় কোনো গোল ছাড়া।
বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটে আলফোনসো ডেভিসের শট বারের ওপর দিয়ে যায়। ৫৩ মিনিটে কেইনকে রুখে দেন লুনিন। এরপর ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে মুসিয়ালাকে প্রতিহত করেন রিয়াল গোলক্ষক লুনিন। দুই মিনিট পর রিয়ালের গ্যালারি নিস্তব্ধ করে দেন ডেভিস। কেইনের বাড়ানো বল পায়ে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো শটে জাল কাঁপান তিনি।
পরবর্তীতে আরও বেশ কিছু আক্রমণে করেও কিছুতেই গোলের দেখা পাচ্ছিল না রিয়াল। ভক্তরা অনেকেই তখন বার্য়ানকে ফাইনালে দেখছিল। কিন্তু শেষ তিন মিনিটেই বদলে যায় দৃশ্যপট। লম্বা সময় ধরে গোলপোস্ট অক্ষত রাখা নয়ার ভুল করে বসেন ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে। ভিনিসিয়ুসের শটে বল তার বুকে লেগে হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। সামনেই ছিলেন হোসেলু। এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলতো টোকায় জালে বল জড়ান। সমতায় ফেরে মাদ্রিদ ক্লাব।
এরপর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে অ্যান্টনিও রুডিগারের কাছ থেকে গোলমুখের সামনে বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দেন হোসেলু। যদিও প্রথমে তার গোলটি রেফারি বাতিল করলেও পরবর্তীতে ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত বদল করেন। ফাইনালে যাওয়ার উচ্ছ্বাসে মাতেন রিয়াল সমর্থকরা। আগামী ১ জুন ১৫তম শিরোপার লক্ষ্যে মাঠে নামবে রিয়াল। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে পিএসজিকে বিদায় করা বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।