হার দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ

ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঘোচাতে বোলারদের যে দায়িত্ব নিতে হতো সেটা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন তাসকিন-সাকিবরা। বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ে চড়াও হয়েছে লঙ্কান ব্যাটাররা। টর্নেডো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার-প্লেতেই বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন দুই লঙ্কান ওপেনার। এরপর বাংলাদেশ শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে। জয়ের আশা কখনো জাগাতে পারেনি। ফলে ৭ উইকেটের হার দিয়েই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হলো লিটন দাসের দলের।
পাল্লেকেলেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ১৯ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। এতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যধানে এগিয়ে গেলো স্বাগতিকরা।
স্বল্প রানের পুঁজিতে ভালো শুরু করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। বিপরীতে পাল্লেকেলের ব্যাটিং উইকেটে আক্রমণাত্মক শুরু করে শ্রীলঙ্কা। উদ্বোধনী জুটিতে দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা আর কুশাল মেন্ডিস মিলে গড়েন ২৮ বলে ৭৮ রানের ইনিংস।
পঞ্চম ওভারে নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফেরার আগে ১৬ বলে ৪২ রানের টর্ণেডো ইনিংস খেলেন তিনি। এরপরও ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। দেখেশুনে খেলতে থাকে লঙ্কানরা। কুশাল পেরেরাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস।
২৫ বলে ২৪ রান করা পেরেরাকে ফিরিয়ে রিশাদ হোসাইন সেই জুটি ভাঙলেও ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে যায় বাংলাদেশের। এরপর দলকে জয়ের বন্দরের কাছে রেখেই বিদায় নেন মেন্ডিস। ৫১ বলে ৭৩ রানের ঝঁকঝঁকে ইনিংস খেলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে শামীম পাটোয়ারির কাছে ক্যাচ দেন তিনি। ৫টি চার আর ৩টি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস।
চার নম্বরে নামা আভিস্কা ফার্নান্দো নতুন ব্যাটার অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাকে নিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করেন। আভিস্কা ১১ রানে আর আসালাঙ্কা ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৩০ বলে ৪২ রান। কিন্তু পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগেই সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। ফেরার আগে ১৭ বলে করেন মাত্র ১৬ রান।
পাওয়ার-প্লে শেষে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যাটাররা একে তো উইকেট বিলিয়েছেন তার উপর আবার মন্থর ব্যাটিংয়ে খেলার গতি নষ্ট করেছেন। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে এসে ১১ বলে মোটে ৬ রান করে বিদায় নেন অধিনায়ক লিটন দাস।
ইনিংস লম্বা করতে পারেননি ইমনও। নবম ওভারে দাসুন শানাকার বলে ফেরার আগে করেন ২২ বলে ৩৮ রান। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করে ১৩ বলে ১০ রান করে ফেরেন তাওহিদ হৃদয়। এরপর মন্থর ব্যাটিংয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন প্রায় দুই বছর পরে দলে ফেরা মোহাম্মদ নাঈম শেখ আর মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৩ বলে ২৯ রান করে মিরাজ ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
নাঈমের মন্থর ব্যাটিংয়ের বিপরীতে শেষদিকে নেমে ক্যামিও খেলে বাংলাদেশের স্কোর দেড়শ ছাড়ান শামীম পাটোয়ারী। ২ ছক্কায় ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন শামীম। আর নাঈম ২৯ বলে ৩২ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৪/৫ (তামিম ১৬, ইমন ৩৮, লিটন ৬, হৃদয় ১০, মিরাজ ২৯, নাঈম ৩১*, শামীম ১৪*; করুনারত্নে ১-০-৮-০, থুসারা ৪-০-৩২-১, বিনুরা ৩-০-২২-০, থিকশানা ৪-০-৩৭-২, শানাকা ৪-০-২২-১, ভ্যান্ডার্সি ৪-০-২৫-১)
শ্রীলঙ্কা: ১৯ ওভারে ১৫৯/৩ (নিশাঙ্কা ৪২, পেরেরা ২৪, মেন্ডিস ৭৩, আভিস্কা ১১*, আসালাঙ্কা ৫*; সাইফউদ্দিন ৩-০-২২-১, তাসকিন ৩-০-৪৩-০, সাকিব ৪-০-৩৪-০, মিরাজ ৪-০২৪-১, শামীম ১-০-১১-০, রিশাদ ৪-০-২৪-১)