বাংলাদেশ কোচের হাতে থাকা ‘বিশেষ ব্যাট’ এর দাম কত, কাজ কী?

বাংলাদেশের ব্যাটারদের পাওয়ার হিটিংয়ের দুর্বলতা বেশ পুরোনো। পুরুষ কিংবা নারী দল, একই সমস্যায় ভুগছে সবাই। যেটা আধুনিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিং সার্মথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে। ক্রিকেটের মারকাটারি ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি। হরহামেশাই অন্যান্য দলগুলোকে দুইশ রান করতে দেখা যায়। কিন্তু বাংলাদেশ আটকে আছে এখনো সেই ১৫০-১৬০ রানের গণ্ডিতে।
দেরিতে হলেও ক্রিকেটারদের দুর্বলতা বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ক্রিকেটারদের পাওয়ার হিটিংয়ের এই দুর্বলতা কাটাতে পাওয়ার হিটিং কোচ নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। বাংলাদেশে এসে আলোচিত এক ব্যাট দিয়ে মিরাজ-লিটনদের ব্যাটিং শ্যাডো করাচ্ছেন ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরিচিত মুখ জুলিয়ান উড।
দেশে এসে শুরুতে দেশি কোচদের নিয়ে একটি সেশন নেন উড। এরপর কাজ করেন নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে। গত ১৫ আগস্ট থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন লিটন-শান্তদের নিয়ে। সচারচর ক্রিকেট ব্যাট নয়, উড শ্যাডো করাচ্ছেন বিশেষ এক ব্যাট দিয়ে। এরপর থেকে দেশের ক্রিকেট প্রেমিদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কী নাম বিশেষ এই ব্যাটে? বিশেষ কী আছে আর এর দামই বা কত?
কী নাম এই ব্যাটের?
মূলত এই ব্যাটটা দিয়ে বাজবলের অনুশীলন করা হয়। বিশেষ এই ব্যাটের নাম প্রো ভেলোসিটি। ভিন্ন ভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য ব্যাটটির তিনটি মডেল পাওয়া যায়। ৮-১২ বছর বয়সীদের জন্য ৩২ ইঞ্চির আন্ডারলোড মডেল পাওয়া যায়। যেটার ওজন ১.০২১ কেজি প্রায়। ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৬০ মাইল গতির বল মোকাবেলার জন্য এই ব্যাটটি দিয়ে অনুশীলন করা হয়।
দ্বিতীয় মডেলটির নাম ৩২ ইঞ্চি ওভারলোড। যেটি তৈরি করা হয়েছে ১৩-১৭ বছর বয়সীদের জন্য। এই মডেলটির ওজন ১.১৯১ কেজি প্রায়। এই মডেলটি দিয়ে ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৭৫ মাইল গতির বল মোকাবেলার জন্য অনুশীলন করা হয়। আর তৃতীয় মডেলটির নাম ৩২ ইঞ্চি এক্সট্রিম ইম্প্যাক্ট। ১.৩৬১ কেজির এই মডেলটি তৈরি করা হয়েছে ১৭ বছরের ওপরের বয়সীদের জন্য। এই মডেলটি দিয়ে ঘন্টায় ৭৫ মাইলের ওপরের বল মোকাবেলার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
প্রো ভেলোসিটির বিশেষত্ব কী?
বিশ্বের প্রায় সকল পাওয়ার হিটিং কোচই এখন প্রো ভেলোসিটি দিয়ে ব্যাটিং করাচ্ছেন। বাজবলের এই ব্যাটটি মূলত ব্যাট স্পিড, সুইং মেকানিক্স এবং হাত-চোখের সমন্বয়ে উন্নতিতে কাজ করে। আরেকটু সহজ করে বললে- এটি ব্যাটারের শটের ক্রম, কম্প্যাক্ট সুইং, শট খেলার পরে সঠিক ফলো-থ্রো ও পুশ শট থেকে রক্ষা করে।
ব্যাটটি কীভাবে কাজ করে?
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ৩২ ইঞ্চি এক্সট্রিম ইমপ্যাক্ট দিয়ে অনুশীলন করাচ্ছেন জুলিয়ান উড। এই মডেলটিতে আটটি রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড আছে। যেটা ট্রেডিশনাল ব্যাটের মতো প্রো ভেলেসিটির ব্যারেলকে ভারী করে তোলে। তবে এই রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড কমানো বাড়ানো যায়। রেজিস্ট্যান্স যত বাড়ানো যায়, তত ব্যারেলটি স্লাইড করানো কঠিন হয়।
এরপর যখন ক্রিকেটাররা ব্যাটটি সুইং করেন তখন দুই ধরনের শব্দ হয়। ব্যাটার যখন সঠিকভাবে ব্যাটটি সুইং করতে পারে এবং মেকানিক্স ঠিক থাকে, তখন ‘ডাবল ক্লিক’ শব্দ হয়। আর যখন সবকিছু সঠিক হয় না, তখন ‘সিঙ্গেল ক্লিক’ শব্দ হয়। যে কারণে ব্যাটার নিজেই বুঝতে পারে তার ব্যাট সুইং সঠিকভাবে হয়নি।
কত দাম এই ব্যাটের?
প্রে ভেলোসিটি ব্যাটের মডেল আলাদা আলাদা হলেও দাম সবগুলোর একই। এই ব্যাটগুলো কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৪৪৫ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। এর সঙ্গে আপনাকে যোগ করতে হবে আমদানি খরচ।