ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যা জানালেন ঝিনাইদহের আক্তার-নুর জাহান দম্পতি
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/06/03/akter.jpg)
ট্রেন চলছিল। মাগারিব নামাজ শেষ করে উঠেছেন মাত্র। এমন সময় বিকট শব্দে কেঁপে ওঠেন আক্তার। ধীরে ধীরে তাদের পেছনের বগি হেলতে শুরু করে। ভয়ে আতকে উঠেন সবাই। কী হচ্ছে বুঝতে পারিছিলেন না কেউ। বাথের উপরের সিটে ছিলেন তিনি, স্ত্রী ছিলে নীচের সিটে। বগিতে গড়িয়ে যাওয়ার অন্তত ১০ মিনিট পার হলে কোনোমতে বগি থেকে নামেন তারা। দেখেন—আগেই অনেকে নেমে পড়েছেন। চারদিক কান্নায় ভারি। শত শত মানুষ ছুটছে দিগ্বিদিক। বাজছে অ্যাম্বুলেন্স, সাইরেন। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি, রক্তে লাল গোটা এলাকা আর মানুষের কাঁধে-কাঁধে লাশ আর লাশ দেখে বুঝে যান বড় ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন তারা। যদিও ‘অচেনা-অজানা শহরে’ কোন দিকে যাবেন, বুঝতে পারছিলেন না আক্তার-নূর জাহান দম্পতি।
ভারতের ওরিষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বেঁচে যাওয়া ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সামন্তার মো. আক্তারুজ্জামান ও তার স্ত্রী নূরজাহানের বর্ণনায় ফুটে ওঠে এমনই দৃশ্য। তারা দুর্ঘটনাকবলিত করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ছিলেন।
মহেশপুর সরকারি পদ্মপুকুর শেখ হাসিনা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আক্তারুজ্জামান আল্লাহ শুকরিয়া আদায় করে এনটিভি অনলাইনকে জানান, ভারতের চেন্নাইয়ের ভেলোরে যাচ্ছিলেন তারা। দুর্ঘটনার ট্রমার মধ্যেই স্ত্রীর হাত ধরে হাঁটছিলেন আক্তার। সামনেই চোখে পড়ে জনবসতি ও রেলগেট। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছেন হাজারও জনতা। এলাকার মানুষেরা এই দম্পতির সহযোগিতায়ও হাত বাড়িয়ে দেন, দেখিয়ে দেন পথ।
আক্তারুজ্জামান জানান, কিছুদুর হেঁটে যেতেই তারা বাসস্ট্যান্ড পেয়ে যান। রাত তখন বেশ গভীর। ভুপেনম্বরগামী একটি বাসে ওঠেন তারা। ১৮০ পথ পাড়ি দিয়ে পোঁছান ভুপেনশ্বর রেল স্টেশনে। আতঙ্কের মধ্যেই ফের ভোর হয় তাদের। পুবের আকাশে দেখেন সূর্য।
আক্তারুজ্জামান জানান, তিনি ও তার স্ত্রী যে ট্রেনে করে চেন্নাইয়ে যাচ্ছেন, ওই ট্রেনের বগিতে অন্তত আটজন জীবিত বাংলাদেশি রয়েছেন। আক্তারুজ্জামানের কাছেই বসে আছেন ঢাকার এক দম্পতি।
আক্তারুজ্জামান জানান, আগামীকাল রোববার আনুমানিক ভোর ৫টার দিকে ভারতের চেন্নাইয়ে পৌঁছাবে ট্রেনটি।