অভিবাসীবাহী মার্কিন ফ্লাইট অবতরণের অনুমতি দেয়নি মেক্সিকো
অভিবাসীদের তাড়িয়ে দিতে ব্যবহার করা মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি পরিবহন উড়োজাহাজ অবতরণে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকো। যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর কর্মকর্তাদের বরাতে এনবিসি নিউজে এমন খবর উঠে এসেছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালায় এমন তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে মার্কিন সামরিক বিমান, প্রতিটি ফ্লাইটে প্রায় ৮০ জনের মতো অভিবাসী ছিলেন। অনুমতি না মেলায় সি-১৭ পরিবহন উড়োজাহাজটি পরিকল্পনা অনুসারে মেক্সিকোয় অবতরণ করতে পারেনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি মেক্সিকো সরকার। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকোর সম্পর্ক এখন আলোচনায়। দুই দেশের যৌথ সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তিনি। সীমান্তে অতিরিক্ত দেড় হাজার সেনা মোতায়েনেরও নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এছাড়াও আরও কয়েক হাজার সেনা সীমান্তে যুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
মেক্সিকোর মাদক চক্রকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে আমেরিকা উপসাগর করা হয়েছে। এছাড়াও মেক্সিকোর সব পণ্যে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প, যা আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করা হতে পার।
তবে পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত না হয়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম। এমনকি ফিরে আসা মেক্সিকোর নাগরিকদের পুনর্বাসনের বিষয়েও তার মনোভাব খোলামেলা।
কিন্তু এই বামপন্থি নেতা বলেন, ‘অভিবাসীদের সবাইকে তাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে তার সম্মতি নেই। মার্কিন অর্থনীতির জন্য মেক্সিকোর অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ।’
সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের স্থানান্তরিত করতে মার্কিন সামরিক বাহিনী উড়োজাহাজ পরিচালনা করছে। এরআগে লোকজনকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনী পরিবহন উড়োজাহাজ ব্যবহার করতো, যেমনটা ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনাপ্রত্যাহারের সময় ঘটেছে।
কিন্তু স্মরণাতীতকালে এই প্রথমবারের মতো অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে উড়োজাহাজ ব্যবহার করতে দেখা গেছে মার্কিন সামরিক বাহিনীকে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়া, সান দিয়াগো, টেক্সাস ও এল পাসো থেকে পাঁচ হাজার অভিবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে ফ্লাইট পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী।
গুয়েতেমালা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার ৮০ অভিবাসী বহনকারী তিনটি মার্কিন ফ্লাইট সেখানে অবতরণ করেছে।