অস্তিত্বের সংকটে পড়লে ‘শেষ অস্ত্র’ বেছে নেবে পাকিস্তান

ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের জন্য প্রস্তুত থাকার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। পাশাপাশি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি তাদের দেশের অস্তিত্বের প্রতি সরাসরি হুমকি তৈরি হয়, তবে পাকিস্তান তার পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না। খবর দ্য ডনের।
গতকাল সোমবার (২৮ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ এসব কথা বলেন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনী তৎপর করেছি, কারণ এখন যেকোনো কিছু আসন্ন। ওই পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই এই সিদ্ধান্তগুলো (আগেই) নেওয়া হয়েছে।’
খাজা আসিফ জানান, সামরিক বাহিনী সরকারকে ভারতীয় হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে অবহিত করেছে। তবে আগ্রাসন আসন্ন মনে হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সেনাবাহিনী।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি পর্যটন কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গত চার দিন ধরে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ তুলে গুলি বিনিময় করছে। পেহেলগাম হামলার পরপরই ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই দুই সন্দেহভাজনকে পাকিস্তানি বলে দাবি করেছে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। ‘অস্তিত্বের প্রতি সরাসরি হুমকি’ দেখা দিলে তবেই তারা পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ব্যবহার করবে।
পরে সামা টিভিকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা উচিত, দিগন্তে যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে আসছে।’ চ্যানেলটি তাকে উদ্ধৃত করে আরও বলেছে, ‘আগামী এক, দুই, তিন বা চার দিনের মধ্যে যুদ্ধ হওয়ার স্পষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।’
পরে জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ অবশ্য তার আগের মন্তব্যকে কিছুটা হালকা করে বলেন, আগামী দুই থেকে তিন দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’। যদি কোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে, তবে তা এই সময়ের মধ্যেই ঘটতে পারে, অন্যথায় তাৎক্ষণিক বিপদ কেটে যাবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইসলামাবাদ উপসাগরীয় দেশ ও চীনসহ বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যদেরকেও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছে।
আসিফ কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘আরব উপসাগরের আমাদের কিছু বন্ধু উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন।’
গত সপ্তাহে চীন, সৌদি আরব, ইরান ও যুক্তরাজ্যের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। প্রত্যেকেই উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।