মস্কোতে ব্যাপক ড্রোন হামলা, সব বিমানবন্দর বন্ধ

রাশিরায় মস্কোতে দ্বিতীয় রাতের মতো ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এ অবস্থায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজ মঙ্গলবার (৬ মে) ভোরে থেকে মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
রাশিয়ার বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসাভিয়াতসিয়া টেলিগ্রামে জানায়, মঙ্গলবার ভোরে ড্রোন হামলার কারণে বিমানবন্দরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অন্তত ১৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যেগুলো বিভিন্ন দিক থেকে শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তিনি জানান, ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষ শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের ওপর পড়লেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের খারকিভের মেয়র জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী রাতারাতি খারকিভ ও কিয়েভ অঞ্চলেও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার পেনজা ও ভোরোনেজ শহরের গভর্নররাও ড্রোন হামলার শিকার হওয়ার খবর দিয়েছেন। রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলে একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা ভাঙার খবর দিয়েছেন, যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে গতকাল সোমবারও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ড্রোন হামলার অভিযোগ করেছিল রাশিয়া। এ তখন তারা ২৬টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছিল।
এদিকে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ দাবি করেছেন, তাদের বাহিনী রোববার রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের টিয়োটকিনো গ্রামের কাছে একটি ড্রোন কমান্ড ইউনিটে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। এপ্রিল মাসে রাশিয়া কুর্স্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের দাবি করলেও ইউক্রেন পাল্টা দাবি করেছে, তাদের সৈন্যরা এখনও সীমান্ত পেরিয়ে ওই অঞ্চলে কাজ করছে।
কুর্স্কের আঞ্চলিক গভর্নর আলেকজান্ডার খিনশটেইন জানিয়েছেন, ইউক্রেনের হামলায় রাইলস্ক শহরের একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের দুটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং স্প্লিন্টারের আঘাতে দুজন কিশোর আহত হয়েছেন। রুশ সামরিক ব্লগাররা ইউক্রেনীয় বাহিনীর গ্রামে প্রবেশের চেষ্টার খবরও দিয়েছেন।

গতকাল এক বিবৃতিতে ইউক্রেন জানায়, কুর্স্ক অভিযানের নয় মাস পরেও তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের ভূখণ্ডে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী সুমি অঞ্চলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ টিয়োটকিনো থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে দুটি বসতি থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন গত বছর আগস্ট মাসে কুর্স্কে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে একটি বাফার জোন তৈরির চেষ্টা করেছিল এবং সুমি ও পার্শ্ববর্তী এলাকাকে রক্ষা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আলোচনার ক্ষেত্রে এটিকে একটি দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল।