ভারতীয় দুর্গগুলোর পতন ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে : শাহবাজ শরিফ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ও যুদ্ধবিমান যেভাবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর দুর্গগুলোকে নীরব (ধ্বংস) করে দিয়েছে, তা ইতিহাসে সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর শনিবার (১০ মে) রাতে শাহবাজ শরিফ জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এমন মন্তব্য করেন।
দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বিশ্বকে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, পাকিস্তান একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি। আমাদের সম্মান ও বীরত্ব আমাদের জীবনের চেয়েও প্রিয়। যদি কেউ তাদের চ্যালেঞ্জ করে, তবে আমরা দেশকে রক্ষা করার জন্য একটি লৌহদৃঢ় প্রাচীর হয়ে উঠি।’
শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, পেহেলগাম হামলার ঘটনাকে ‘অজুহাত’ হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানের ওপর ‘অযৌক্তিক যুদ্ধ’ চেষ্টা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু অহংকারবশত ভারত বৃথাই আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করেছে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে নিরীহ জীবন, মসজিদ ও বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।’
ভারত কাপুরুষোচিত ও লজ্জাজনক কাজ করেছে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি ছিল প্রকাশ্য আগ্রাসন। তবে ভারত যখন তাদের সামরিক স্থাপনা ও জল সংরক্ষণাগার লক্ষ্য করে ব্যর্থ হামলা চালায়, তখন পাকিস্তান শত্রুকে তাদের ভাষায় জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়’। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আলোচনার টেবিলের বৈঠক এখন যুদ্ধক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
শত্রুর সাম্প্রতিক আগ্রাসনের দেশটির সশস্ত্র বাহিনী ‘পেশাদার ও কার্যকর জবাব’ দিয়েছে উল্লেখ করে শাহবাজ বলেন, ‘ইতিহাস সর্বদা মনে রাখবে কীভাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ও যুদ্ধবিমান ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যে’ ভারতীয় সামরিক বাহিনীর দুর্গগুলোকে নীরব করে দিয়েছিল। এতে শত্রুদের সামরিক ডিপো, গোলাবারুদ সংরক্ষণের স্থান এবং বিমান ঘাঁটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এর আগে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এই যুদ্ধবিরতির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাকিস্তান সর্বদা তার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে আপস না করে এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট থেকেছে। যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা পাকিস্তানের এই নীতিকে আরও দৃঢ় করেছে।

অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রীও নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স (ডিজিএমও) পর্যায়ে আলোচনার পর আজ স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৫:৩০) থেকে স্থল, আকাশ ও জলপথে সমস্ত প্রকার গুলিবর্ষণ ও সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ করা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য আগামী সোমবার (১২ মে) দুই দেশের ডিজিএমও পর্যায়ে ফের আলোচনা হবে।