মহামারি প্রতিরোধে চুক্তি গ্রহণের আহ্বান ডব্লিউএইচও প্রধানের

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রস আধানোম গেব্রেয়েসুস মহামারির পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রস্তাবিত ‘প্যান্ডেমিক অ্যাগ্রিমেন্ট’ বা ‘মহামারি চুক্তি’ এই সপ্তাহেই সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে গৃহীত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, জেনেভায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে আজ সোমবার (১৯ মে) উদ্বোধনী ভাষণে ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘এই সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো মহামারি চুক্তিটি বিবেচনা করবে এবং আশা করি তা গ্রহণ করবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর গত মাসে এই চুক্তির খসড়া সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার শেষ পর্যায়ে এসে অংশগ্রহণ প্রত্যাহার করে নেয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে দেশটি ডব্লিউএইচও ছাড়ার এক বছরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করে।
টেড্রস আধানোম বলেন, ‘সংকটের মাঝে এবং প্রবল বিরোধিতার মুখেও আপনারা নিরলস পরিশ্রম করেছেন, হাল ছাড়েননি এবং লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। এই ঐকমত্য সৃষ্টির পেছনে যে শ্রম রয়েছে, তা প্রশংসনীয়।’
মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও মোকাবিলার ওপর ভিত্তি করে তৈরি এ চুক্তি আগামীকাল (মঙ্গলবার) আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে।
চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো মহামারি আগাম শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সমন্বয় জোরদার করা, ভ্যাকসিন ও চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে বৈষম্য কমানো, সার্বজনীন নজরদারি এবং তথ্য আদান-প্রদানের কাঠামো গড়ে তোলা।
কোভিড-১৯ মহামারির সময় ধনী ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে টিকাপ্রাপ্তিতে চরম বৈষম্য দেখা দেয়। সে অভিজ্ঞতা থেকেই অনেক উন্নয়নশীল দেশ এ চুক্তির পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয়। তবে কিছু রাষ্ট্র এই চুক্তিকে তাদের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে মনে করছে, যার ফলে আলোচনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
চুক্তিতে প্যাথোজেন অ্যাক্সেস অ্যান্ড বেনিফিট-শেয়ারিং (পিএবিএস) ব্যবস্থা ২০২৬ সালের মে মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। এই ব্যবস্থার আওতায় মহামারিসংক্রান্ত জীবাণু নিয়ে গবেষণা এবং সেখান থেকে উদ্ভূত ওষুধ, টেস্ট ও টিকার ন্যায্য বণ্টনের রূপরেখা নির্ধারিত হবে। এটি চূড়ান্তভাবে কার্যকর হওয়ার জন্য অন্তত ৬০টি দেশের অনুসমর্থন প্রয়োজন।