ওয়াকফ আইন নিয়ে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত : ভারতের প্রধান বিচারপতি

ভারতের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই বলেছেন, সংসদে সাংবিধানিকভাবে বৈধ বলে প্রণীত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সুস্পষ্ট কোনো মামলা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২০ মে) ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা পিটিশনগুলোর শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি গাভাই ও বিচারপতি এ জি মসীহর বেঞ্চে এই পিটিশনগুলোর শুনান হয়।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, কেন্দ্র এই মামলায় চিহ্নিত তিনটি মূল বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে। তবে পিটিশনকারীদের আইনজীবীরা মামলার পরিধি আরও বাড়াতে চাইলে প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে আপত্তি জানান।
পিটিশনকারীদের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিবাল যুক্তি দেন, এই আইনটি ওয়াকফ সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে এবং কোনো যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আইনের একটি শর্তের সমালোচনা করেন, যেখানে বলা হয়—কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে ইসলাম পালনকারী ব্যক্তিই কেবল ওয়াকফ তৈরি করতে পারবে। তিনি এটিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেও আখ্যায়িত করেন।

সিবালের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘সংসদ কর্তৃক পাসকৃত আইনগুলোর ক্ষেত্রে সংবিধানসম্মত হওয়ার অনুমান থাকে। সুস্পষ্ট কোনো পরিস্থিতি তৈরি না হলে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না, বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে, আমাদের আর বেশি কিছু বলার প্রয়োজন নেই।’
কপিল সিবাল বলেন, নতুন আইন অনুযায়ী, যেকোনো গ্রাম পঞ্চায়েত বা একজন বেসরকারি ব্যক্তি অভিযোগ উত্থাপন করলেই সম্পত্তির ওয়াকফ মর্যাদা চলে যেতে পারে এবং সরকারি কর্মকর্তা নিজের স্বার্থেই বিচারক হিসেবে কাজ করতে পারেন। ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন, রাষ্ট্রের নয়। এ ছাড়া নতুন আইন এই সম্পত্তির মালিকানা কেড়ে নিচ্ছে।
মসজিদ ও মন্দিরের মধ্যে তুলনা টেনে সিবাল বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়ন করতে পারে না। তিনি বলেন, মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ বা কবরস্থান তৈরির জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তির প্রয়োজন হয়, যা সাধারণত মানুষ ওয়াকফ হিসেবে দান করে থাকেন।