ঝুঁকিতে পাকিস্তানের অর্থনীতি : বিশ্বব্যাংক

বছরের পর বছর ধরে শুল্ক সুরক্ষানীতি অনুসরণ করা সত্ত্বেও পাকিস্তানের রপ্তানি কার্যকারিতা হ্রাস পাচ্ছে। যা দেশটিকে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ঝুঁকির মুখে ফেলছে। সর্বশেষ নীতি মূল্যায়নে ইসলামাবাদকে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯০-এর রপ্তানি ছিল জিডিপির ১৫ শতাংশের বেশি। অথচ ২০২৪ সালে দেশটির রপ্তানি কমে মাত্র ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এটি এই অঞ্চলে এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।
‘অভ্যন্তরীণ থেকে বহির্মুখিতা : রপ্তানিনির্ভর প্রবৃদ্ধির পথে পাকিস্তানের পরিবর্তন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, রপ্তানি হ্রাসের এই প্রবণতা ব্যবসায়িক পরিবেশের ক্রমবর্ধমান বাধাগুলির প্রতিফলন, যা সম্প্রতি উচ্চ শুল্ক নীতির দিকে পরিবর্তনের ফলে আরও তীব্র হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে পাকিস্তানের বাণিজ্য নীতির কাঠামোগত দুর্বলতাগুলি তুলে ধরা হয়েছে। তারা ফেডারেল বোর্ড অব রেভিনিউ (এফবিআর) থেকে জাতীয় শুল্ক বোর্ডে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা স্থানান্তরের সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি নীতি বাস্তবায়নে সহজতা আনতে এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে একটি ‘জাতীয় নিয়ন্ত্রক বিতরণ অফিস’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সরকারের ‘উড়ান পাকিস্তান’ নামে পাঁচ বছরের সংস্কার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পরিকল্পনা চালু করার বিষয়টিকে স্বাগত জানায় বিশ্বব্যাংক। তবে সংস্থাটি সতর্ক করছে, অর্থনীতিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে শুল্ক সংস্কারের পাশাপাশি ব্যাপক কাঠামোগত পরিবর্তনও প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যবসায়িক পরিবেশের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ভুলভাবে সাজানো বিনিময় হার ব্যবস্থা, উচ্চ জ্বালানি খরচ, নিয়ন্ত্রক জটিলতা ও সীমিত ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে আরও সতর্ক করা হয়েছে, কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্যের উপর উচ্চ আমদানি শুল্ক উৎপাদনশীলতা, বিক্রয় ও মজুরিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
পাকিস্তানের রপ্তানি বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ২৯ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্কের আরেকটি বড় হুমকির সম্মুখীন। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স (পিআইডিই) সতর্ক করেছে যে, পাল্টা শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমে যেতে পারে, যা বছরে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির কারণ হবে।