স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে একটি অভিবাসী নৌকা তীরে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে ডুবে গিয়ে চারজন নারীসহ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, বিপজ্জনক এই আটলান্টিক পথটির সর্বশেষ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এটি। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আটলান্টিক দ্বীপপুঞ্জের জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, একটি হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধারকারীরা এল হিয়েরো দ্বীপের লা রেস্টিংগা বন্দরে মানুষকে বাঁচাতে কাজ করছে। স্প্যানিশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, নৌকাটিতে কমপক্ষে ১৫০ জন অভিবাসী ছিলেন।

সরকারি সম্প্রচারক আরটিভিই উল্টে যাওয়া নৌকায় আটকে থাকা এবং এল হিয়েরো থেকে পানিতে পা ফেলার সময় উদ্ধারকারীদের জীবন রক্ষাকারী রিং ছুঁড়ে দেওয়ার ফুটেজ সম্প্রচার করেছে।

জরুরি পরিষেবাগুলো প্রাথমিকভাবে লা রেস্টিংগায় ‘একটি নৌযান ডুবে যাওয়ার পর দুই নারী মৃত্যুর’ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, ‘স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলো আরও দুই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।’ তারা এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলেছে, এরপর পরিষেবাগুলো পাঁচ ও ১৬ বছর বয়সী দুই মেয়ের মৃত্যুর খবর দেয়।

একটি তিন বছর বয়সী ছেলে ও একটি পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে প্রায় ডুবে যাচ্ছিল। পরে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হেলিকপ্টারে করে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম টেনেরিফের একটি হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হবে। জরুরি পরিষেবাগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে তারা আরও জানিয়েছে, শ্বাসকষ্টজনিত কারণে আরও চার শিশুকে এল হিয়েরোর হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।

বিপজ্জনক অভিবাসন পথ ও পরিসংখ্যান

স্পেন প্রতি বছর পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে আসা হাজার হাজার ইউরোপমুখী অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়। এসব অভিবাসীরা সাধারণত মালি, সেনেগাল ও মরক্কোর নাগরিক। প্রবল সমুদ্র স্রোত এবং পুরোনো জরাজীর্ণ নৌযান দীর্ঘ পারাপারকে অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তোলে।

ক্যামিনান্দো ফ্রন্টেরাস এনজিও'র মতে, ১ জানুয়ারি থেকে ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত সমুদ্রপথে স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টা করার সময় কমপক্ষে ১০ হাজার ৪৫৭ জন অভিবাসী মারা গেছে অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।

ভূমধ্যসাগরে কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে অভিবাসীরা আটলান্টিক রুটে যাওয়ার চেষ্টা করলে ২০২৪ সালে প্রায় ৪৭ হাজার অনিয়মিত অভিবাসী এই দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছায়। যা টানা দ্বিতীয় বছরের বার্ষিক রেকর্ড ভেঙেছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, এই বছর সংখ্যাটি এখন পর্যন্ত কমেছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ মে পর্যন্ত একই সময়ের তুলনায় এই বছর এই দ্বীপপুঞ্জে অভিবাসী প্রবেশ ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে।