তাইওয়ানকে ঘিরে ফের বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা

তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সতর্ক করে বলেছেন, তাইওয়ানের জন্য একটি ‘আসন্ন’ হুমকি তৈরি করছে চীন। একইসঙ্গে এশিয়ার দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে এবং যুদ্ধ প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রকে আঞ্চলিক শান্তির জন্য ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টিকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে চীন। খবর বিবিসির।
আজ শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এশীয় প্রতিরক্ষা সম্মেলন ‘শাংগ্রি-লা সংলাপে’ ভাষণ দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন হেগসেথ।
চীনকে একটি ‘আধিপত্যবাদী শক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এশিয়ার অনেক অংশে আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ করতে চায় চীন। দেশটি এশিয়াতে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তন করতে সামরিক শক্তি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ২০২৭ সালের মধ্যে সামরিক বাহিনীকে তাইওয়ান আক্রমণের জন্য সক্ষমতা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
হেগসেথ স্পষ্ট করে বলেন, ‘কমিউনিস্ট চীন তাইওয়ানকে বলপূর্বক জয় করার যেকোনো প্রচেষ্টা চালালে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।... হুমকি বাস্তব। এবং এটি আসন্ন হতে পারে।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, চীনের সঙ্গে যুদ্ধ বা সংঘাত চায় না যুক্তরাষ্ট্র, তবে তারা এই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল থেকে সরে যাবে না বা তাদের মিত্রদের উপর চীনের আধিপত্য বিস্তার করতে দেবে না।

এদিকে সিঙ্গাপুরের চীনা দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘উস্কানি ও প্ররোচনায় ভরা’ বলে অভিহিত করেছে। দূতাবাস বলেছে, হেগসেথ ‘বারবার চীনকে অসম্মান ও আক্রমণ করেছেন এবং তথাকথিত ‘চীনা হুমকিকে অবিরামভাবে তুলে ধরেছেন’। আসলে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজেই সবচেয়ে বড় ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’। দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ‘আক্রমণাত্মক অস্ত্র স্থাপন’ এবং চীনা দ্বীপপুঞ্জ ও প্রবাল প্রাচীরের উপর গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর উদাহরণও তুলে ধরে চীনের দূতাবাস।
ঐতিহ্যগতভাবে শাংগ্রি-লা সংলাপ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের জন্য প্রভাব বিস্তারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। তবে এই বছর যুক্তরাষ্ট্র তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি দল পাঠালেও একটি উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্ন-স্তরের দল পাঠিয়েছে চীন। একইসঙ্গে আগামীকাল রোববারে নির্ধারিত ভাষণ বাতিল করেছে দেশটি, যার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এই ঘটনা দুই পরাশক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনারই ইঙ্গিত বহন করছে।