পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইরান ও জাতিসংঘের মধ্যে মতবিরোধ

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও ইরানের মধ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেখা যাচ্ছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) আইএইএ জানিয়েছে, ‘তেহরানের সব পারমাণবিক স্থাপনায় পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য একটি চুক্তি হয়েছে’। তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইরান জানায়, ‘এই চুক্তি পরিদর্শনের নিশ্চয়তা দেয় না’।
আইএইএ-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী ইরানের সমস্ত স্থাপনা পরিদর্শনের সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ইরান এখন থেকে একটি স্বাধীন ও ব্যাপক উপায়ে সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা পুনরায় শুরু করবে।
তবে এর পরপরই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলেন, চুক্তিটি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা দেয় না। তিনি বলেন, আমি আবারও বলতে চাই— চুক্তিটি বর্তমানে বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনা ছাড়া আইএইএ পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার প্রদান করে না। ভবিষ্যতে কীভাবে এই পরিদর্শনগুলো করা হবে, সে বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।
ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ইরান আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে। ঐ হামলায় ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইরান জুলাই মাসে একটি আইন পাস করে, যেখানে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দেশ ছেড়ে যেতে বলা হয়। অন্যদিকে, আইএইএ ইরানের পারমাণবিক মজুদ যাচাই করতে না পারাকে গুরুতর উদ্বেগের বিষয় বলে উল্লেখ করেছে।
মঙ্গলবারের (৯ সেপ্টেম্বর) এই চুক্তিটি দীর্ঘদিনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের পর উষ্ণতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। আরাঘচি বলেছেন, চুক্তিটি ইরানের উদ্বেগের সমাধান করবে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন— কোনো শত্রুতাপূর্ণ কাজ হলে তেহরান চুক্তি বাতিল করতে প্রস্তুত।

ইরান আরও বলেছে, যদি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হয়, তাহলে এই চুক্তি বাতিল করা হবে।
অন্যদিকে, ইউরোপীয় শক্তিগুলো ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসা ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিয়েছিল।