দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১৯ হাজার শিশু নিহত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মধ্যে অন্তত ১৮ হাজার ৮৮৫ জন শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। প্রায় দুই বছরের এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শিশুদের মৃত্যু সংখ্যা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। খবর আল জাজিরার।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জানায়, গাজায় শিশুদের জন্য কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। খাদ্য ও ওষুধের ওপর ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সেখানে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ তৈরি হয়েছে। তারা জানায়, জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এখন “মৃত্যুর ফাঁদে” পরিণত হয়েছে।
গত পাঁচ মাসে গড়ে প্রতি মাসে ৫৪০ শিশু নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)-এর তথ্য উল্লেখ করেছে ইউএনআরডব্লিউএ।
মঙ্গলবার ভোর থেকে অন্তত ৫১ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আটজন নিহত হন ত্রাণ সংগ্রহের লাইনে গুলি চালানোর ঘটনায়। খান ইউনুস ও দেইর আল-বালাহতে তাবুতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের ওপর বোমা হামলায় আরও কয়েকজন নিহত হন।
একইদিন হামাস জানায়, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবটিতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, সীমিত পর্যায়ে বন্দি বিনিময় ও ইসরায়েলি সেনাদের আংশিক প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে।
তবে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী সরকার সব বন্দিকে (জীবিত ও মৃত) একসঙ্গে ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত চুক্তিতে রাজি হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বর্তমান পরিস্থিতিকে নিজের জন্য “সুবিধাজনক” মনে করছেন এবং আংশিক যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী নন।

এদিকে গাজা সিটির জেইতুন ও সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি ট্যাংক ও ভারী গোলাবর্ষণে বহু মানুষ ঘরে আটকে পড়েছেন। স্থানীয়রা পরিস্থিতিকে “অসহনীয় ও প্রাণঘাতী” বলে বর্ণনা করছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজন অনাহারে মারা গেছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন ১১২ শিশু ও ১৫৪ প্রাপ্তবয়স্ক।