ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ মার্কিন ইতিহাসে অন্যতম কর কাটছাঁট?

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সম্প্রতি রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনসভার সাফল্য ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ নামের একটি কর ও ব্যয় বিলের পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন। তিনি এই আইনকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কর কাটছাঁট বলে দাবি করেছেন, যা মূলত ২০১৭ সালে ট্রাম্প স্বাক্ষরিত একটি আইনকে স্থায়ীভাবে রূপ দিয়েছে।
এই আইনটি যদি কংগ্রেসের মাধ্যমে পুনরায় অনুমোদিত না হতো, তাহলে ২০২৫ সালের শেষে এর মেয়াদ শেষ হয়ে যেত। নতুন এই আইনে টিপস, ওভারটাইম ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী আমেরিকানদের জন্য কিছু নতুন কর কাটছাঁটও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ভ্যান্স দাবি করেছেন, তাদের এই কর কমানোর পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। কিন্তু তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, তার এই দাবি ভুল। নতুন এই কর কমানোর পরিমাণ অনেক হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় নয়। আসলে, ১৯৮০ সালের পর থেকে যতবার কর কমানো হয়েছে, তার মধ্যে এটি তৃতীয় বা কোনো কোনো হিসাবে সপ্তম স্থানে আছে।
ভ্যান্স বলেন, মুদ্রাস্ফীতির কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কর বিলের আর্থিক পরিমাণ পরিবর্তিত হয়। তাই, আমরা কর কর্তনকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) শতাংশ হিসেবে তুলনা করেছি, যা একটি নিরপেক্ষ চিত্র তুলে ধরে।
এই তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি কর সাশ্রয়কারী আইনটি ছিল ১৯৮১ সালে পাস হওয়া একটি বিল, যা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান স্বাক্ষর করেছিলেন। সেই আইনটি দেশের পাঁচ বছরের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কর কমিয়েছিল। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ২০১২ সালের একটি বিল, যা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বাক্ষর করেছিলেন, এটি জিডিপির ১ দশমিক ৭ শতাংশ কর কমিয়েছিল। বর্তমান অনুমানের ভিত্তিতে ট্রাম্পের ২০২৫ সালের আইনটি জিডিপির ১ দশমিক ৪ শতাংশ কর কমিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে।
তবে, এই আইনের মাধ্যমে আমেরিকানরা ২০২৬ সাল থেকে তাদের প্রাপ্য করে খুব বেশি পরিবর্তন দেখতে পাবে না। কারণ, ২০২৫ সালের আইনটি মূলত ২০১৭ সালে চালু হওয়া নিম্ন কর হারকেই স্থায়ীভাবে বাড়িয়েছে। তাই, আমেরিকানরা তাদের করের ক্ষেত্রে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করবে না।

তবুও, এই বিলে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে যা কিছু পরিবারকে সামান্য সুবিধা দেবে। যেমন, শিশুদের জন্য কর ক্রেডিট প্রতি সন্তানের জন্য ২০০ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে দুই হাজার ২০০ মার্কিন ডলার হয়েছে।
পাশাপাশি, এককভাবে যারা কর দেন, তাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা সামান্য বেড়ে ১৫ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার হয়েছে। আর স্বামী-স্ত্রী মিলে যারা কর দেন, তাদের জন্য এই সীমা বেড়ে হয়েছে ৩১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। তবে, কিছু গরিব পরিবারকে বেশি কর দিতে হতে পারে, কারণ তাদের স্বাস্থ্য বীমার খরচ কমানোর জন্য যে সুবিধা ছিল, এই বিলে তা আর বাড়ানো হয়নি।