শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে কারাগারে

শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে রাষ্ট্রীয় তহবিল অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার দল ও বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকের সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। খবর এএফপির।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিক্রমাসিংহেকে আটক করা হয় ও পরে কলম্বোর নিউ ম্যাগাজিন কারাগারে রাখা হয়।
বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেই সফরের সময় সরকারি অর্থের অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
যদিও বিক্রমাসিংহে দাবি করেছেন, তিনি তার স্ত্রীর ভ্রমণের খরচ ব্যক্তিগতভাবে মিটিয়েছেন ও কোনো সরকারি তহবিল ব্যবহার করেননি। তবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ অভিযোগ করেছে, তিনি ভ্রমণের জন্য ১৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন রুপি (৫৫ হাজার ডলার) সরকারি অর্থ ব্যবহার করেছেন।
বিক্রমাসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) ও প্রধান বিরোধী দল সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) এই গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মতে, দিশানায়েকের সরকার বিক্রমাসিংহেকে ভয় পাচ্ছে, কারণ তিনি ভবিষ্যতে আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন। তাই তাকে কারাবন্দি করে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে।
বিক্রমাসিংহের সঙ্গে কারাগারে দেখা করে এসজেবি-এর সংসদ সদস্য নলিন বান্দারা জানান, সাবেক প্রেসিডেন্ট নতুন সরকারের ‘নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সব বিরোধী দলকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটের পর গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তিনি আইএমএফ থেকে ঋণ নিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেন। এরপর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে দিশানায়েকের কাছে হেরে যান।

দিশানায়েকের বামপন্থী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে দুজন সাবেক মন্ত্রীকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের পরিবারের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধেও মামলা চলছে। চলতি মাসে শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান ও কারা প্রধানকেও দুর্নীতির অভিযোগে জেলে পাঠানো হয়েছে।