বৈদেশিক সহায়তা বন্ধে সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্প প্রশাসনের আপিল

যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধে চলমান আইনি লড়াইয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ের বিপক্ষে জরুরি আপিল করা হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করলে নিম্ন আদালতের রায়ের কারণে তাদের এই অর্থ খরচ করতে বাধ্য হতে হবে। খবর সিএনএনের।
আপিলে উচ্চ আদালতকে আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে একটি জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বলছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে একটি অপূরণীয় কূটনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যদিও উচ্চতর আদালত এ মাসের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিয়েছে তবুও একটি নিম্ন আদালতের আদেশ এখনও কার্যকর রয়েছে। যার ফলে সরকারকে বৈদেশিক সহায়তার জন্য এই টাকা ব্যয় করতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, যদি সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করে, তবে এই রায় অনুযায়ী সরকারকে বৈদেশিক সাহায্যের জন্য দ্রুতই প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। যা ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করবে।
এই মাসের শুরুতে মার্কিন আপিল বিভাগের তিন বিচারকের প্যানেল রায় দিয়েছিল, কেবল আইনসভাই কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত ব্যয়ে পরিবর্তন আনার জন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। কোনো অলাভজনক সংগঠন সরকারের অর্থ ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়কে বাতিল করে দেয়।
এই রায় প্রশাসনের পক্ষে গেলেও মামলাটি নিয়ে পূর্ণ ডিসি সার্কিটে পুনরায় আপিল করা হয়। যা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া নিম্ন আদালত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেওয়া জেলা আদালতের রায় বহাল রেখেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, আদালতের আদেশের ফলে সরকারকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলার বরাদ্দকৃত অর্থ বিদেশি সাহায্যের জন্য ব্যয় করতে হবে।
মামলার নথিতে ট্রাম্প প্রশাসন উল্লেখ করেছে, জেলা আদালত সরকারি ব্যয়ের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আদালতের এই আদেশ সরকারের ওপর অর্থ ব্যয় করার চাপ সৃষ্টি করছে, যা দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করার মাধ্যমে আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা আদালতের রায় স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করেছে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিপক্ষে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও এইচআইভি/এইডস কর্মসূচি পরিচালনাকারী সংস্থা মামলা করে। যাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থের অন্যতম দাতা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আর এই অর্থ প্রদানের দায়িত্ব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং বর্তমানে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘ইউএস এইডের’ ওপর।
মামলাটি গত মার্চ মাসেও একবার সুপ্রিম কোর্টে গড়িয়েছে। আদালতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা প্রাথমিকভাবে বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ রাখার বিষয়ে প্রশাসনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সেই সিদ্ধান্তের ফলে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় বহাল থেকে যায়।