বিশাল ক্ষতির পরও যেভাবে সামরিক বাহিনী পুনর্গঠন করছে রাশিয়া

ইউক্রেন যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক সেনা হতাহত হওয়া সত্ত্বেও রাশিয়া তার সামরিক বাহিনীকে নতুন করে গড়ে তুলছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধে ১০ লাখেরও বেশি রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে। তবে, ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ওলেগ ইগনাটভ-এর মতে, কৌশল পরিবর্তনের ফলে এখন হতাহতের সংখ্যা কমেছে। খবর আলজাজিরার।
যুদ্ধক্ষেত্রে এখন ভারী অস্ত্রের পরিবর্তে ড্রোন ও ছোট ছোট দলের মাধ্যমে আক্রমণ করা হয়। এতে হতাহতের সংখ্যা কমেছে। এছাড়াও, রাশিয়া যেসব ভিন্ন উপায়ে তার সামরিক বাহিনীতে নতুন লোকবল যুক্ত করছে তা হলো :
গত বছর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন সৈন্যদের জন্য প্রায় চার হাজার ৯৭০ ডলার (প্রায় চার লাখ রুবেল) স্বাগত বোনাস ঘোষণা করেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে এর পরিমাণ দ্বিগুণ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়াও, ন্যূনতম দুই হাজার ৫০০ ডলার মাসিক বেতন ও ঋণ সহায়তার মতো সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। দরিদ্র গ্রামীণ অঞ্চল বা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে এই প্রস্তাব খুবই আকর্ষণীয়।
রাশিয়া কারাবন্দি ও অপরাধীদের সামরিক বাহিনীতে যোগদানের সুযোগ দিচ্ছে। খুনি ও ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত বন্দিদেরও মুক্তি দিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠানো হচ্ছে। যুদ্ধের পর বেঁচে থাকলে তারা মুক্তি পায়। এই কারণে গত দুই বছরে রাশিয়ার কারাগারের জনসংখ্যা এক লাখ ২০ হাজার কমেছে, যা এখন রেকর্ড সর্বনিম্ন তিন লাখ ১৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
যুদ্ধের প্রথম বছরে হাজার হাজার তরুণ সামরিক সেবা এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও, এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। অনেক তরুণ স্বেচ্ছায় দেশপ্রেমের ডাকে সাড়া দিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে।

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ৭৫ শতাংশ রুশ নাগরিক এই যুদ্ধের পক্ষে। ইভান চেনিনের মতো তরুণরা দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন।
রাশিয়া এখন ইউক্রেনের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে নতুন সৈন্য নিয়োগ করছে। ইউক্রেনীয় সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের উপ-প্রধান ভাদিম স্কিবিটস্কি বলেন, রাশিয়ান ফেডারেশনের নিয়োগ পরিকল্পনা প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০৫ থেকে ১১০ শতাংশ পূরণ হচ্ছে। এই গতিতে চলতে থাকলে রাশিয়া বছরের শেষ নাগাদ তাদের কোটা পূরণ করে ফেলবে।