নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ মেনে নেবে ইরান

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তার দেশ একটি স্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত। এই চুক্তির অধীনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর কঠোর পর্যবেক্ষণ মেনে নেবে ও অভ্যন্তরীণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সীমা নির্ধারণ করবে।
গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক নিবন্ধে আরাঘচি ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউরোপের উচিত মাসের শেষে জাতিসংঘের বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা থেকে সরে আসা।
আরাঘচি সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই সুযোগ হাতছাড়া হয়, তবে এর পরিণতি অভূতপূর্বভাবে ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
আরাঘচি যুক্তি দিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো স্থগিত না করলে ইউরোপেরই ক্ষতি হবে। কারণ, এতে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কেবল যুক্তরাষ্ট্রই থেকে যাবে ও ইউরোপ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় নেতারা যদি মনে করেন যে ইরানের প্রতি কঠোর আচরণের মাধ্যমে ট্রাম্প তাদেরকে গৌণ খেলোয়াড় হিসেবে দেখা বন্ধ করবেন, তাহলে তারা বিরাট ভুল করবেন।
ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইউরোপকে বাদ দিয়েছে বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন। আরাঘচি লিখেছেন, ওয়াশিংটনের বার্তা স্পষ্ট— ‘সমর্থন পেতে হলে ইউরোপকে অটল আনুগত্য দেখাতে হবে’।
আরাঘচি জানিয়েছেন, জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শকদের বোমা বিধ্বস্ত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ফিরে আসার শর্তাবলি নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। তবে, এর মধ্যেই ইরানের রক্ষণশীল-অধ্যুষিত সংসদ এমন একটি বিল নিয়ে আলোচনা করছে, যা পাস হলে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের রেশ ধরে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই পদক্ষেপের ফলে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে।

আরাঘচি তার নিবন্ধে আরও দাবি করেছেন, ইসরায়েল যদি পুনরায় ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার চেষ্টা করে, তবে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জুন মাসে যেমনটি আমরা দেখেছি, ইরানের শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলকে আবারও পরাজিত করতে প্রস্তুত।