শিকাগোতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের অনুমোদন দিলেন ট্রাম্প

স্থানীয় নেতাদের আপত্তি উপেক্ষা করে শিকাগোতে ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন স্থানীয় সময় শনিবার (৪ অক্টােবর) জানান, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফেডারেল কর্মকর্তাদের ও সম্পদ সুরক্ষার জন্য ৩০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে অনুমোদন দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকান শহরগুলোতে আইনহীনতা সহ্য করবেন না।” খবর আল জাজিরার।
শনিবার সকালে শিকাগোতে মার্কিন বর্ডার প্যাট্রোল কর্মীদের গুলিতে এক সশস্ত্র নারী আহত হওয়ার ঘটনার পর ইলিনয়ের ডেমোক্র্যাট গভর্নর জেবি প্রিৎসকার ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার কথা জানান।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এক বিবৃতিতে জানায়, ওই নারী গাড়ি দিয়ে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্সির গাড়িতে ধাক্কা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। যদিও গুরুতর কোনো আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা আহত হননি। আহত নারী নিজেই হাসপাতালে যান বলে জানানো হয়।
এদিকে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান ক্রিস্টি নোম শিকাগোর ব্রাইটন পার্ক এলাকায় অতিরিক্ত “স্পেশাল অপারেশনস” পাঠানোর ঘোষণা দেন।
গভর্নর প্রিৎসকার বলেন, সকালে পেন্টাগন থেকে তাকে জানানো হয় যে সেনাদের ডাকা হবে। তিনি এ পদক্ষেপকে “অসংবিধানিক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, “আজ সকালে ট্রাম্প প্রশাসনের ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার আমাকে আল্টিমেটাম দিয়েছে: তোমার সেনাদের ডাকো, নাহলে আমরা ডাকব। এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও আমেরিকানবিরোধী সিদ্ধান্ত।”
শিকাগো এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে ফেডারেল উপস্থিতির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছে। শুক্রবার (৩ অক্টােবর) ব্রডভিউর একটি আইসিই স্থাপনার সামনে শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন ডিসি এবং পোর্টল্যান্ডের মতো ডেমোক্র্যাট শাসিত শহরগুলোতেও একই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ট্রাম্প এর আগে লস অ্যাঞ্জেলেস ও ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা পাঠানো ঠেকাতে মামলা করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পান। তবে সরকার আপিল করেছে এবং ফেডারেল আদালত ইঙ্গিত দিয়েছে যে প্রশাসন শেষ পর্যন্ত জয়ী হতে পারে।
প্রিৎসকার অভিযোগ করেন, “এটি ট্রাম্পের তৈরি এক রাজনৈতিক নাটক। এর সঙ্গে জননিরাপত্তার কোনো সম্পর্ক নেই, বরং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার খেলা।”

অন্যদিকে, ওরেগনের একটি ফেডারেল আদালত পোর্টল্যান্ডে ট্রাম্প প্রশাসনের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট জজ কারিন ইমারগাট শনিবার এ আদেশ দেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প শহরটিকে “যুদ্ধবিধ্বস্ত” বলে দাবি করলেও বাস্তবে পরিস্থিতি তেমন নয়।
ওরেগনের আইসিই ভবনকে ঘিরে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমিত আকারে প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের মোতায়েন ঘোষণার পর প্রতিবাদ আরও জোরদার হয়েছে।