ভারতের ওড়িশায় সংঘর্ষের জেরে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ, ইন্টারনেট বন্ধ

ভারতের ওড়িশার কটক শহর আবারও উত্তেজনায় টালমাটাল। দুর্গাপূজার বিসর্জন শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে শহরটিতে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসন ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে। খবর এনডিটিভির।
শুক্রবার (৩ অক্টােবর) রাতে দরগা বাজার এলাকায় বিসর্জন শোভাযাত্রায় উচ্চ শব্দের সংগীত বাজানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি হাতাহাতি ও পাথর ছোড়াছুড়িতে গড়ায়। এতে কটকের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ খিলাড়ি ঋষিকেশ দন্যাদেওসহ একাধিক ব্যক্তি আহত হন। একজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পুলিশ ইতোমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং সিসিটিভি, ড্রোন ও মোবাইল ফুটেজ খতিয়ে দেখে আরও অভিযুক্তদের শনাক্তের কাজ চলছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতের সহিংসতার পর রোববার (৫ অক্টােবর) বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোটরসাইকেল র্যালি বের করে। র্যালিটি দরগা বাজার দিয়ে অতিক্রম করার সময় একাধিক দোকান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে।
উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে রোববার (৫ অক্টােবর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার (৬ অক্টােবর) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাটক পৌরসভা এলাকা, সিডিএ ও সংলগ্ন অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও বন্ধ থাকবে।
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাজি শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সহস্র বছরের ভ্রাতৃত্বের শহর কটকের শান্তি কিছু দুষ্কৃতীর কারণে বিঘ্নিত হয়েছে। দোষীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।” তিনি আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজেডি নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বলেন, “ভ্রাতৃত্বের শহর কটকে এ ধরনের পরিস্থিতি অত্যন্ত দুঃখজনক। পুলিশ সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়েছে।”
ভিএইচপি প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে আজ সোমবার কাটকে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে।

রাজ্যের পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) ওয়াইবি খুরানিয়া জরুরি বৈঠক করে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার রাতে স্থগিত থাকা বিসর্জন কার্যক্রম রোববার সকালে নিরাপত্তার মধ্যেই সম্পন্ন হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ১২০টি প্রতিমা শান্তিপূর্ণভাবে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।